ফারদিন খান নাইম,( সাতক্ষীরা (বিশেষ প্রতিনিধি)
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার রাজধানী খ্যাত ৩নং সরুলিয়া ইউনিয়নের নির্বাচন আগামী ১১ এপ্রিল। কে হচ্ছেন এবারের এ ইউপির চেয়ারম্যান তা নিয়ে রীতিমতো নিরবে বিশ্লেষণ করছেন ভোটাররা। এবারের নির্বাচনে বিগত ৪ বারের নির্বাচিত ও বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ মতিয়ার রহমান সহ আওয়ামীলীগেরই বিদ্রোহী ৩ জন প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। এছাড়া জামায়াতের ছত্রছায়ায় থেকে সাবেক ছাত্রশিবির নেতা শাহ আলমও এ ইউপির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে।
দলীয় বিধিনিষেধ থাকায় এ নির্বাচন থেকে একেবারেই সরে দাড়িয়েছে জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থীরা। সে কারণে এ ইউপির নির্বাচনী সমীকরণ জটিল হয়ে উঠেছে। কেননা বর্তমান চেয়ারম্যান নৌকা প্রতীক পেলেও ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে জনসাধারণের প্রিয় তো হতেই পারেনি বরং তিক্ততা আর ব্যর্থতার সাথে চরম অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ তার মাথার উপর ভর করে বসেছে। এদিকে ক্লিন ইমেজ নিয়ে তালা উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি পাটকেলঘাটা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আব্দুল হাই বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নেমেছে।
অপরদিকে আওয়ামীলীগের অন্যতম কর্ণধর তরুণ প্রজন্মের অহংকার সাবেক শিক্ষক নেতা আব্দুর রব পলাশ অনেকটাই কৌশল করে প্রার্থী হিসেবে সকল দলের কর্মী সমর্থকদের ভোট নিয়ে চেয়ারম্যান হতে মরিয়া। অপরদিকে আওয়ামীলীগের আর এক বিদ্রোহী প্রার্থী কৃষকলীগ নেতা প্রভাষক আমিনুজ্জামান তিনিও যথেষ্ট বুদ্ধিমত্তার সাথে ভোটারদের মন জয় করতে চেষ্টা করছে। এ গেল প্রার্থীদের কথা। যেসকল ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগ করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবেন তাদের ভোটের প্রতি কতটা আগ্রহ তা নিয়ে রয়েছে রীতিমতো সন্দিহান।
নির্বাচন হবে কি না তা নিয়ে অনেকটাই সংশয়ে রয়েছে ভোটাররা । এসমস্ত নানা প্রতিকূলতা ভোটার তথা প্রার্থীরাও মোকাবেলা করছে। তাই ভোটাররা অনেকটাই নিরবে ভোট প্রয়োগ করবে বলে প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রকাশ্যে কোন প্রার্থীর পক্ষে সরব না হওয়ায় এ ইউপির নির্বাচন জটিল থেকে জটিল সমীকরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এক কথায় ভোটার তথা প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতায় এ ইউপির নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে যেতে পারে।
দেশে দ্বিতীয়বারের মত দলীয় প্রতীকের নির্বাচনে ভোটারদের মধ্যে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষন । প্রার্থী নিজেকে যোগ্যতা প্রমানে নিজ নিজ এলাকায় বিরামহীনভাবে গনসংযোগ কালে নানান প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন । কিন্তু ভোটাররা বলছে অন্যা কথা । সৎ যোগ্য অভিজ্ঞ প্রার্থীকে নির্বাচিত করবেন তারা। তবে ভোটাররা বলছে দীর্ঘদিন ইউনিয় আওয়ামীলীগের সম্মেলন না হওয়া এবং অযোগ্য ব্যাক্তি দলীয় প্রতীকের কারনে ভোটাররা সৎ.যোগ্য ব্যাক্তিকে বেছে নিতে বলে জানান। এক্ষেত্রে আওয়ামীলীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীকে থেকে আগামী নির্বাচনে ইউনিয়নে অভিভাবক হিসেবে আসতে পারে।
নির্বাচন অফিস সুত্রে জানা গেছে, এই উপজেলায় ৯৯ টি ওয়ার্ডে ৫৯৫টি কক্ষে এ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। চেয়ারম্যান পদে ৪৩ জন, মেম্বর পদে ৪৫২ জন এবং সংরক্ষিত নারী আসনে ১৩৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। এরমধ্যে আওয়ামীলীগ ১১, জামায়াত ৫, বিএনপি ২, জাতীয় পার্টি ৩, ওয়ার্কাস পার্টি ১, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন ২ জন, ১৯ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দীতা করছেন। উপজেলায় ১১টি ইউনিয়নের মোট ভোটার ২লাখ ৩০ হাজার ৮২৪ জন। অধিকাংশ ইউনিয়নের দেখা গেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগে একাধিক প্রার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ গ্রহন করছেন। অধিকাংশ ইউনিয়নের নতুন প্রার্থীর ছড়াছড়িতে নির্বাচনী মাঠ বেশ জমজমাট হয়েছে । কে কে হবেন আগামী দিনের ১১ইউনিযনের কান্ডারী । উল্লেখ্য, ইউনিয়ন পরিষদ গঠিত হয় ১৯৭৩ সালে । ১৯৯৩ সালে ইউনিয়নের সাবেক ৩টি ওয়ার্ড হতে ৯টি ওয়ার্ড গঠিত হয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ