নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
তথ্য গোপন করে খানজাহান আলী রোড ক্ষুদ্র শিল্প ও ব্যবসায়ী মালিক সমিতি লি:এর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন শেখ আব্দুল রাব্বী (রিপন)। যা সমবায় বিধি মালার ১৯(ঙ) ও ২৪(৩) ধারা অনুযায়ী অবৈধ। এ বিষয়ে সমবায় অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সদ্য শেষ হওয়া খানজাহান আলী রোড ক্ষুদ্র শিল্প ও ব্যবসায়ী মালিক সমিতি লি: এর নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে অপর প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন মানিক। সমবায় কর্মকর্তা বলছেন অভিযোগ আমলে নিয়ে শুনানী শেষে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।
গত ০৮ জুলাই খানজাহান আলী রোড ক্ষুদ্র শিল্প ও ব্যবসায়ী মালিক সমিতি লি: এর ত্রি বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দীতা করেন শেখ আব্দুল রাব্বী (রিপন), আব্দুল্লাহ আল মামুন মানিক ও মোঃ মিঠু আকন। নির্বাচনে শেখ আব্দুল রাব্বী ( (রিপন) ও মোঃ মিঠু আকন তথ্য গোপন করে অবৈধভাবে ঋণ খেলাপি অবস্থায় নির্বাচনে অংশগ্রহন করেছেন।
এ বিষয়ে প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন মানিক বিজয় সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুল রাব্বী (রিপন) এর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সমবায় অধিদপ্তরে। লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, শেখ আব্দুল রাব্বী (রিপন) খানজাহান আলী রোড ক্ষুদ্র শিল্প ও ব্যাবসায়ী মালিক সমিতি লি: এর বিগত কমিটির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। এ সময় তিনি সমিতি থেকে এক লক্ষ টাকা ঋণ গ্রহন করেন। যার ৩৬ কিস্তির ০৬ কিস্তি টাকা পরিশোধ করেন। আর ত্রিশ কিস্তির টাকা পরিশোধ না করে সময় পার হওয়ার পরও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য থাকায় তথ্য গোপন করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন ও বিজয়ী হন। যা যা সমবায় বিধি মালার ১৯(ঙ) ও ২৪(৩) ধারা অনুযায়ী অবৈধ।
এ বিষয়ে আব্দুল্লাহ আল মামুন মানিক বলেন, তার প্রতিদ্বন্দী তথ্য গোপন করে অবৈধভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন ও বিজয়ী হয়েছেন। এর প্রতিকার চেয়ে আমি সমবায় অধিদপ্তরে নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচন শেষ হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
মানিক আরো বলেন, শেখ আব্দুল রাব্বী (রিপন) অভিযোগের বিষয় জানতে পেরে সম্প্রতি সমিতির টাকা পরিশোধ করেছেন। কিন্তু নির্বাচনের আগে ও পরে ঋণ খেলাপী ছিলেন তিনি এই তথ্য টা গোপন করার চেষ্টা করছেন তিনি।
এ বিষয়ে শেখ আব্দুল রাব্বী (রিপন) বলেন, তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। সমিতি তার নিকট কোন টাকা পাবে না। তিনি সকল টাকা পরিশোধ করেছেন। তিনি বলেন, আমি সমিতি থেকে ১ লক্ষ টাকা লোন নিয়েছি গত বছর। এই লোনের মেয়াদ এ বছরের সেপ্টেম্বরে শেষ হবে। আমার কিস্তি বাদ থাকলেও আমি আমার মেয়াদ কলের মধ্যে সকল টাকা পরিশোধ করেছি। তখন তাকে প্রশ্ন করা হয় তিনি নির্বাচনের আগে ঋণ পরিশোধ করেছেন না নির্বাচনের পরে ঋণ পরিশোধ করেছেন। তিনি বলেন, নির্বাচনের পর একমাস আগে তিনি সকল ঋণ পরিশোধ করেছেন।
এবং তিনি যে ঋণ খেলাপি এটি তাকে সমিতি থেকে নির্বাচনের আগে বা পরে কখনও নোটিশও করা হয়নি।
ঘটনার সত্যতা জানতে সমিতির কোষাধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান মমিনুর নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, শেখ আব্দুল রাব্বী (রিপন) ২০২২ সালের নভেম্বর মাসের ১৭ তারিখ সমিতি থেকে ঋণ গ্রহন করেছেন। যার ৪৬ কিস্তির মাত্র৬ কিস্তি টাকা তিনি দিয়েছেন তিনি সমিতির তার কাছে পাওনা ৯৩ হাজার ৪৪০ টাকা। যার মেয়াদ চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের ১৫ তারিখ পর্যন্ত।
তিনি বলেন, দশ পনের দিন আগে বিলম্ব কিস্তি প্রদানের কারনে জরিমানাসহ শেখ আব্দুল রাব্বী (রিপন) ঋণ পরিশোদ করেছেন।
এ সময় তিনি বলেন, আমাদের সমিতির নিয়ম ৪৬ কিস্তিতে আপনি ঋণ নিতে পারবেন। প্রতিটি কিস্তি প্রতি সপ্তাহে দিতে হবে। যদি আপনি কোন সপ্তাহে কিস্তি না দেন তাহলে আপনি ঋণ খেলাপী হবেন। পরবর্তীতে সেই কিস্তি পরিশোধ করতে প্রতিদিনের জন্য ১০ টাকা করে জরিমানা দিতে হয়।
সমিতির সভাপতি সোলাইমান হোসেন দুলাল বলেন, নির্বাচনের আগে তারা বর্তমান নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ঋণ খেলাপি হয়ে যে নির্বাচন করেছেন এটি জানতে পারেননি। পরে দায়িত্ব গ্রহনের পর সকল কাগজপত্র দেখ তারাও যানতে পেরেছেন যে নব নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক সমিতির কাছে ঋণ খেলাপী অবস্থায় নির্বাচনে অংশগ্রহন করেছেন। যা তাদের সমিতির ও সমবায় বিধিমালা লঙ্ঘন করেছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, সমবায় অধিদপ্তরে অভিযোগের বিষয়ে শুনেছি। আমাদের একজন সদস্য অভিযোগ করেছেন। সমবায় অধিদপ্তর আমাকে ডাকলে আমরা আমাদের তথ্য ও উপাত্ত সরবরাহ করবো।
জানা যায়, নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে অপর প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী মোঃ মিঠু আকন ও তথ্য গোপন করে ঋণ খেলাপি অবস্থায় নির্বাচনে অবৈধভাবে অংশগ্রহন করেছেন। তিনিও সমিতি থেকে ১ লক্ষ টাকা ঋণ গ্রহন করেছেন। যার মাত্র চার কিস্তি তিনি পরিশোধ করেছেন। যার মেয়াদ শেষ হয়েছে নির্বাচনের আগে চলতি বছরের জুলাই মাসের ১০ তারিখে।
এ সকল বিষয়ে খুলনা জেলা সমবায় কর্মকর্তা সৈয়দ জসীম উদ্দিন জানান, তারা লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে শুনানী অনুষ্ঠিত হবে। শুনানীতে সকল পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আইনানুগ ভাবে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
0 মন্তব্যসমূহ