এস এম রবিউল ইসলাম
তোকে কতো বার বলবো আমার কাপড় গুলা একটু ভালো করে পরিষ্কার করবি .
বুঝিনা বাবা তোকে কি করতে এই বাড়িতে রেখেছে.....
শুধু শুধু আমার বাবার অন্য ধংস্স করছে..... তোর বাবা,মা গেলো তো গেলো তোকে কেন নিয়ে গেলো না কে জানে...
আপদ একটা... এবার জদি ভালো করে পরিষ্কার না করিস তাহলে মাকে বলে আজ তোর খাওয়া বন্ধ করে দিবো!
(কথা গুলো দিপা আপু হন হন করে চলে গেলো আর আমার আকাশ থেকে টুপটাপ বৃষ্টি নামতে শুরু করলো)
কি ভাবছেন ওপোরের কথা গুলো কেন আমাকে বললো???
তাহলে শুনন
আমি রাজু ইসলাম সাগর....আর পাচটা ছেলেমেয়ের মতো আমার জীবন না,,,
ইন্টার ফাস্ট ইয়ার এ পরি....
আর যে আমাকে কথা গুলো বললো সে আমার চাচাতো বোন সাবরিনা আলম দিপা!
আমি এতিম মানে মা,বাবা কেউ নেই! আমাকে রেখে তারা ঐ আকাশের তারা হয়ে গেছে....
আমার বয়স যখন ৫ বছর তখন তারা একটা রোড এক্সিডেন্টে মারা যাই!
তারপর থেকেই চাচা,চাচির বাড়ি তে আছি,,,,
তবে বাড়ির ছেলে হয়ে নই কাজের মানুষ হয়ে,,,,
একটু আগে বললাম না আমি এতিম কিন্তু আমি ভাবি আমি এতিম না আমি তো চাচা, চাচিকে নিজের মা, বাবা ভাবি, আর দিপা আপুকে নিজের বোন,
কিন্তু চাচা আমাকে নিজের ছেলে ভাবলেও চাচি,আর আমার বোনটা আমাকে কাজের লোক ছাড়া কিছুই ভাবে না...
আমাকে এমন কোনো দিন নেই যে চোখের পানি ফেলতে হয় না!
অনেক কান্না করি রাতে,,
শুধু যে আমাকে অপমান অবহেলা করে তা না, আমাকে অনেক মারধোর ও করা হয়,,
কেউ যদি আমার পিঠ দেখে তাহলে হতোবাক হয়ে যাবে কারন অনেক লাঠির দাগ আছে!
আমি যে পড়ালেখা করছি সেটাও সবার সাথে লড়াই করে কারন আমার আম্মু, আব্বু আমাকে সব সময় বলতো তোকে অনেক বড় হতে হবে,
মানুষের মতো মানুষ হতে হবে!
তখন কথাটা বুঝতাম না কিন্তু এখন বুঝি তাই শতো কষ্টের মাঝেও পড়া লেখা টা চালিয়ে যাচ্ছি!
আপনারা ভাবছেন এতো কষ্টের মাঝে আমি এখানে আছি কেন,,,
কারন আমি যে চাচা,চাচি দিপা আপুকে অনেক ভালোবাসি! তাই ছেড়ে যেতে পারি না,
এতো শুনলেন আমার অতীত এখন বাস্তবে আসি ...
হুমমম সব কাপড় ধোয়া শেষ করে এখন ঘর মুছছি...
হটাৎ কিছু পরার শন্দ পিছনে ঘুরে দেখি একটা ফুলদানি পরে ভেঙে গেছে
হায় হায় এটা আমি ভেঙে ফেলাম এখন কি হবে..
আর এদিকে শব্দ পেয়ে চাচি সাথে সাথে দৌড়ে আসে তারপর দেখে ফুলদানি টা ভেঙে গেছে,,,,
চাচি→ কি করে ভাংলো???
আমি→ আসলে চাচি আমি বুঝতে পারিনি যে পিছোনের টেবিলে ফুল দানিটা ছিলো...
তাই কিভাবে যেন লেগে পড়ে ভেঙে যায়!সসসসসসস চাচি→ এটা কি তোর বাপের টাকায় কিনা,
, দেখে কাজ করতে পারিস না,,, জানিস এটা দিপার কতো প্রিয়!
আমি→.....
চাচি→ আজ তোর খাওয়া বন্ধ, আপদ একটা কি করতে যে তোর বাবা,মা তোরে রেখে গেলো কে জানে,
সাথে করে নিয়ে গেলেই ভালো হতো!
আমি→
(চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে) চাচি,→ হামজাদা দাড়িয়ে আছিস কেন এগুলো কি তোর মরা মা এসে পরিস্কার করবে
তারপর আমি সেই ভাঙা টুকরো গুলো পরিস্কার করতে লাগলাম..
আউচচচ হাতটা কেটে গেলো,,,
রক্ত বের হচ্ছে আসলেই আমি কোনো কিছু পারি না!
পরুক রক্ত...
হাত কাটাতে তো সামান্য কষ্ট হচ্ছে কিন্তু তার চেয়েও তো অধিক কষ্ট লাগলো চাচির কথা গুলো শুনে.
আচ্ছা চাচি কি আমাকে একটু আদর করতে পারে না,,, দিপা আপুকে তো কতো আদর করে,,, আমার ও তো ইচ্ছে করে একটু আদর পেতে! চাচি কেন তাকে মা বলতে বারন করে আমারও তো অনেক ইচ্ছে হয় আমিও কাউকে মা বলে ডাকি.
এখন আমি আমার বিছানায় শুয়ে আছি দুপুরে কিছু খেতে দাইনি ভেবেছিলাম রাতে খাবো কিন্তু দিপা আপু ফুলদানি টা আমি ভেঙেছি জেনে সে আমার রাতের খাওয়া অফ করে দিয়ে
অনেক খুদা লেগেছে সারাদিনে শুধু পানি খেয়ে আছি তাই মাথাটাও অনেক ব্যাথ্যা করছে..... চাচাকে আমি এসব বলিনা,,,চাচা যদি এসব জানতে পারে তাহলে অনেক কষ্ট পাবে আর সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হবে.
মাঝে মাঝে আমার এই নিষ্ঠুর সমাজে থাকতে মন চাইনা,,,, মা,বাবার কাছে যেতে চাই... অনেক কষ্ট হয় যখন আপু আর চাচি বলে, আমাকে কেন আমার বাবা,মা সাথে করে নিয়ে গেলো না, চাচি কেন আমাকে তার ছেলে ভাবতে পারেনা, আমার তো খুব ইচ্ছে হয় চাচিকে মা ডাকতে, চাচি তো দিপা আপুকে নিজের হাতে খাইয়ে দাই,
চাচি কি বুঝতে পারে না আমারও তো খুব ইচ্ছে করে তার হাতে খেতে ,,, কিন্তু আমাকে তো ঠিক মতো খেতেই দাই না,
আর দিপা আপু সব সময় আমার সাথে ওমন করে কেন আমি তো তার ছোট ভাই আমার সাথে তো একটু ভালো ব্যবহার করতে পারে.
কেন আমাকে সবার সামনে তার ভাই বলে পরিচয় দাই না,,, কেন আমাকে আপু বলে ডাকতে বারন করে! এসব কথা ভাবতে ভাবতে চোখ থেকে অনবরত পানি পরছে,
কেউ দেখে না এই পানি কেউ বুঝে না আমাকে,,,, এভাবেই চলছে আমার দিন কাল,,, প্রতিদিন আমাকে অপমান হতে হয় আরো নানান কথা শুনতে হয়....... আজ কলেজে আসছি প্রায় ৭ দিন পর আসলাম কলেজে.
আমার বন্ধু বলতে তেমন কেউ নেই একটায় আছে যাকে আমি সবকিছু বলি, আসলে আমার সাথে তেম কেউ বন্ধুতো করতে আসে না,
আসবেই বা কি করে সবাই দামি দামি পোশাক পড়ে কলেছে আসে আর আমার পোশাকের কথা নাইবা বললাম, বছরে দুইটা প্যান্ট,দুইটা শার্ট পাই, তো সব গুলো ক্লাস করলাম,,, তারপর ক্লাস শেষ করে আমার একমাত্র বন্ধু রিফাতের সাথে কিছু কথা বলে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম.....
রাস্তা দিয়ে হাটছি এমন সময় খেয়াল করলাম কয়েকটা ছেলে একটা মেয়কে অনেক বাজে বাজে কথা বলছে যা আমি মিখেও আনতে পারবো না,,,, তাই আর সহ্য করতে না পেরে রাস্তার পাশ একটা রড পরেছিল তা দিয়ে যে সবথেকে বাজে কথা বলছি তার পায়ে মারি আর আমার হাতে রড দেখে বাকি ছেলেগুলো পালিয়ে যাই,
মেয়েটা→ আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া! আমি→ আরে আপু এখানে ধন্যবাদের কি আছে, আপনি তো আমার বড় আপুর মতো আর আমার আপুকে এসব ছেলেদের হাত থেকে রক্ষা করা দায়িত্ব!
তারপর আরো কিছু কথা বলে আমি বাসায় চলে আসি,
0 মন্তব্যসমূহ