Ticker

6/recent/ticker-posts

Ad Code

Responsive Advertisement

কোরআন ও হাদিসের দলিল সহ ঈদে মিলাদ-উন-নাবী (সাঃ)









মুফতি মাওলানা মুহা.আবুল কাশেম মির্জাগঞ্জি।
মুদাররিস,ঝালকাঠি এন এস কামিল মাদ্রাসা



পবিত্র মিলাদুন্নবীর ইতিহাস অতি প্রাচীন |
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন |সমস্ত আম্বিয়ায়ে কেরামেকে নিয়ে মিলাদের আয়োজন করেছিলেন |তিনি নিজে ছিলেন মীরে মাজলিস বা সভাপতি | সকল নবীগন ছিলেন শ্রোতা | ঐ মজলিসের উদ্দেশ্য ছিল হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের বিলাদত , শান ও মান অন্যান্য নবীগনের সামনে তুলে ধরা এবং তাঁদের থেকে তাঁর উপর ঈমান আনয়ন ও সাহায্য সমর্থনের প্রতিশ্রুতি আদায় করা।
★কোরআন মজিদের ৩য় পারা সুরা আলে এমরানে ৮১-৮২ নং আয়াতে মধ্যে আল্লাহ তায়ালা ঐ মিলাদুন্নবী মাহফিলের কথা উল্লেখ করেছেন | নবীজীর সম্মানে এটাই ছিল প্রথম মিলাদ মাহফিল এবং মিলাদ মাহফিলের উদ্যোগ্ক্তা ছিলেন স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা |ঐ মজলিসে সমস্ত আম্বিয়ায়ে কেরাম ও উপস্থিত ছিলেন | ঐ মজলিসে স্বয়ং আল্লাহ নবীজীর শুধু আবির্ভাব বা মিলাদের উপরই
গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন | সমস্ত নবীগন খোদার দরবারে দন্ডায় মান থেকে মিলাদ শুনেছেন এবং কিয়াম করেছেন |কেননা খোদার দরবারে বসার কোন অবকাশ নেই ,পরিবেশটি ছিল আদবের | মিলাদ পাঠকারী ছিলেন স্বয়ং আল্লাহ এবং কিয়ম কারীগন ছিলেন আমবিয়ায়ে কেরাম |এই মিলাদ ও কিয়াম কোরআনের " ইকতেদো উন নস "  দ্বারা প্রমানিত হলো :
উল্লেখ্য যে কোরআনে মজিদের "নস" চার প্রকার যথা :১/ইবারত , ২/দালালত , ৩/ ইশারা ও ৪/ইক্কতিজা |উক্ত চার প্রকার দ্বারাই দলিল সাবেত হয়।
( নুরূল আনওয়ার দেখুন ) নিম্নে উল্লেখিত আয়াতের
মধ্যে ইবারতের দ্বারা প্রমানিত হয়েছে অঙ্গীকার / দালালাতের দ্বারা নবীগনের মাহফিল , ইশারার দ্বারা মিলাদের বা আবির্ভাবের এবং ইকতিজার দ্বারা কিয়ামের প্রমানিত হয়েছে।
★কোরআন মজিদে আলে এমরানের আয়াত ৮১-৮২ উল্লেখ করা হলো :আল্লাহ বলেন ( ৮১ ) " হে প্রিয় রাসুল !আপনি স্মরণ করূন ঐ দিনের কথা , যখন আল্লাহ তায়ালা সমস্ত নবীগন থেকে প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন এ কথার উপর যে , যখন আমি তোমাদেরকে কিতাব ও হিকমত দিয়ে দুনিয়ায় প্রেরন করবো ; তারপর তোমাদের কাছে আমার মহান রাসুল যাবেন এবং তোমাদের নবুয়্যাত ও কিতাবের
সত্যতার সাক্ষ্য প্রদান করবেন , তখন তোমরা অবশ্য অবশ্যই তাঁর উপর ঈমান আনবে এবং অবশ্যই তাঁকে সাহায্য করবে "আল্লাহ বলেন : " তোমরা কি এ সব কথার উপর অঙ্গীকার করছো এবং এই শর্তে আমার ওয়াদা গ্রহন করে নিয়েছো ( তখন ) তাঁরা সকলেই সমস্বরে বলেছিলেন, ---আমরা অঙ্গিকার করছি | আল্লাহ বলেন : "তাহলে তোমরা পরস্পর সাক্ষি থাক | আর আমি ও তোমাদের সাথে মহাসাক্ষী রইলাম "|( ৮২ ) " অত:পর যে কোন লোক এই অঙ্গীকার থেকে ফিরে যাবে- সেই নফরমান
" (কাফের ) | ( আলে এমরান আয়াত ৮১/৮২ ) |

পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ থেকেই মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের
দলিল আপনাদের খেদমতে উপস্থাপন করছি |
★পবিত্র কুরআনুল কারীমের সুরা আলে ইমরানের ১০৩ নং আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এরশাদ করেন,
" ﺍﺫﻛﺮﻭﺍ ﻧﻌﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻜﻢ "
অর্থাৎ তোমাদেরকে যে নিয়ামত দেওয়া হয়েছে তার জিকির কর
★আল্লাহ পাক পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফের সুরা ইউনুসের ৫৮ নং আয়াতে এরশাদ করেন,
 " ﻗﺎﻝ ﺑﻔﻀﻞ ﺍﻟﻠﻪ ﻭ ﺑﺮﺣﻤﺘﻪ ﻓﺒﺬﺍﻟﻚ
ﻓﻠﻴﻔﺮﺣﻮﺍ ﻫﻮ ﺧﻴﺮﻣﻤﺎ ﻳﺠﻤﻌﻮﻥ
অর্থাৎ হে রাসুল আপনি বলুন আল্লাহর দয়া ও রহমতকে কেন্দ্র করে তারা যেন আনন্দ করে এবং এটা হবে তাদের অর্জিত সকল কর্মফলের চেয়েও
অধিক শ্রেষ্ঠ |
এ পৃথিবীতে যত নেয়ামত রয়েছে বা এসেছে এর
চেয়ে সবচেয়ে বড় নেয়ামত হচ্ছে হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম | আল্লাহর এই
নেয়ামত ও অনুগ্রহকে কেন্দ্র করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা ও আনন্দ উদযাপন করার নির্দেশ স্বয়ং রাব্বুল আলামিন দিয়েছেন যার প্রমান উপরোক্ত পবিত্র কোরআনের আয়াত |
★আবার আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনের সুরা আম্বিয়ার ১০৭ নং আয়াতে দয়াল নবীজির শ্রেষ্টত্ব প্রকাশ করার জন্য ঘোষণা করেন,
" ﻭﻣﺎ ﺍﺭﺳﻠﻨﻚ ﺇﻻ ﺭﺣﻤﺔ ﻟﻠﻌﺎﻟﻤﻴﻦ "
অর্থাৎ নিশ্চয় আমি আপনাকে জগতসমূহের রহমত করেই প্রেরণ করেছি |
★আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কোরআনের ১১৪
নং আয়াতে এরশাদ করেন ,
ﺍﻟﻠﻬﻢ ﺭﺑﻨﺎ ﺍﻧﺰﻝ ﻋﻠﻴﻨﺎ ﻣﺎﺀﺩﺓ ﻣﻦ ﺍﻟﺴﻤﺎﺀ ﺗﻜﻮﻥ ﻟﻨﺎ ﻋﻴﺪﺍ ﻻﻭﻟﻨﺎﻭﺍﺧﺮﻧﺎ
অর্থাৎ ঈসা ইবনে মারিয়াম ( আ ) দুয়া করলেন , হে আল্লাহ ! হে আমাদের প্রভু আমাদের প্রতি আকাশ হতে খাদ্য অবতীর্ণ করুন যেন সেটা আমাদের জন্য অর্থাৎ আমাদের মধ্যে যারা প্রথমে ( বর্তমানে আছে ) এবং যারা পরে , সকলের জন্য আনন্দের বিষয় হয় এবং আপনার পক্ষ হতে এক নিদর্শন হয় ( ঈদের দিন ) | আর আপনি আমাদেরকে রিজিক প্রদান করুন বস্তুত আপনিই সর্বোত্তম রিজিক প্রদানকারী |

মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে খাদ্য ভর্তি পেলে তা যদি ঈসা ( আঃ ) এর ভাষায় সৃষ্ঠির আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত আনন্দ উত্সবের কারণ হয় তবে রাহমাতুল্লিল আলামিন নবীজির মত মহান নেয়ামতের শুভাগমনের দিনটি কতই না গুরুত্বপূর্ণ , মর্যাদাপূর্ণ
ও আনন্দের তা সহজেই অনুমান করা যায় |
★তাছাড়া সুরা আজহাবের ৫৬ নং আয়াতে আল্লাহ পাক এরশাদ করেন ,
"তোমরা আমার হাবিবের প্রতি দুরুদ সালাম
প্রেরণ কর" |
অর্থাৎ আল্লাহ আমাদেরকে স্পষ্ট এখানে নির্দেশ করেছেন উনার হাবিবের প্রতি দুরুদ সালাম
জানানোর জন্য |আল্লাহর নির্দেশ বিবেচনায় যা প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের জন্য ফরজ ( অর্থাৎ নবীজিকে তাজিম করা , সম্মান করা , নবীজির প্রতি ভালো মনোভাব পোষণ করা ) |

মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পক্ষে শত শত সহি হাদিস শরীফ থেকে কিছু হাদিস
শরীফ আপনাদের খেদমতে উপস্থাপন করছি |
রাহমাতুল্লিল আলামিন হুজুর পুর নূর ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই
নিজের মিলাদ পালন করেছেন |

★এই প্রসঙ্গে পবিত্র হাদিস শরীফে এরশাদ
হয়েছে ,
 " ﻋَﻦْ ﺍَﺑِﻰ ﻗَﺘَﺪَﺓَ ﺍﻻَﻧْﺼﺎَﺭِﻯ ﺭَﺿِﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋَﻨﻪُ ﺍَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ
ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺱﺀﻝ ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻡِ ﻳَﻮْﻡ ﺍﻻِﺛْﻨَﻴْﻦِ ﻗَﻞَ ﺫَﺍﻙَ ﻳَﻮْﻡٌ ﻭُﻟِﺪْﺕُ ﻓِﻴْﻪِ ﺑُﻌِﺜْﺖُ ﺍَﻭْﺍُﻧْﺰِﻝَ ﻋَﻠَﻰَّ ﻓِﻴْﻪِ -
অর্থাৎ হজরত আবু কাতাদা ( রা ) হতে বর্ণিত ,
একজন সাহাবী হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে আরজ
করলেন ই রাসুলাল্লাহ , ইয়া হাবিবাল্লাহ
আমার মাতা পিতা আপনার নূরের পাক
কদমে কুরবান হোক | আপনি প্রতি সোমবার
রোজা পালন করেন কেন ? জবাবে সরকারে দুজাহান নূরে মুজাস্সাম হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন , এই দিনে আমার জন্ম হয়েছে , এই দিনে আমি প্রেরিত হয়েছি এবং পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ এই দিনেই আমার উপর নাজিল হয়েছে |
(সহীহ মুসলিম শরীফ ২য় খন্ড, ৮১৯ পৃষ্ঠা,
বায়হাকী: আহসানুল কুবরা, ৪র্থ খন্ড ২৮৬ পৃ:
মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল ৫ম খন্ড ২৯৭ পৃ:
মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক ৪র্থ খন্ড ২৯৬পৃ:
হিলিয়াতুল আউলিয়া ৯ম খন্ড ৫২ পৃ:)

বুখারী শরীফের বিখ্যাত ব্যাখ্যাকারী আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী , ইমাম বদরুদ্দিন
আইনি বুখারী শরীফের ব্যাখ্যায় লিখেন ,
ﻭﺫﻛﺮ ﺍﻟﺴﻬﻴﻠﻲ ﺍﻥ ﺍﻟﻌﺒﺎﺱ ﻗﺎﻝ ﻟﻤﺎ ﻣﺎﺕ ﺍﺑﻮ ﻟﻬﺐ ﺭﺍﻳﺘﻪ ﻓﻲ
ﻣﻨﺎﻣﻲ ﺑﻌﺪ ﺣﻮﻝ ﻓﻲ ﺷﺮ ﺣﺎﻝ ﻓﻘﺎﻝ ﻣﺎ ﻟﻘﻴﺖ ﺑﻌﺪ
ﻛﻢ ﺭﺍﺣﺔ ﺍﻻ ﺍﻥ ﺍﻟﻌﺬﺍﺏ ﻳﺨﻔﻒ ﻋﻨﻲ ﻓﻲ ﻛﻞ ﻳﻮﻡ ﺍﺛﻨﻴﻦ ﻭﺫﻟﻚ ﺍﻥ
ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻭﻟﺪ ﻳﻮﻡ ﺍﻻﺛﻨﻴﻦ ﻭﻛﺎﻧﺖ ﺛﻮﻳﺒﺔ
ﺑﺸﺮﺕ ﺍﺑﺎ ﻟﻬﺐ ﺑﻤﻮﻟﺪﻩ ﻓﺎﻋﺘﻘﻬﺎ
অর্থাৎ হজরত আব্বাস ( রা ) বর্ণনা করেন , " আবু
লাহাবের মৃত্যুর এক বছর পর আমি তাকে স্বপ্নে দেখি |সে আমাকে বলে ভাই আব্বাস আমার মৃত্যুর পর থেকে কবরের জিন্দেগীতে আমি শান্তিতে নেই | কিন্তু প্রতি সোমবার এলেই আমার শাস্থি লাগব
করে দেওয়া হয় | এই ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে হজরত আব্বাস ( রা )বলেন আবু লাহাবের এই সোমবারের শাস্তি লাগবের কারণ হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিলাদত শরীফ
উপলক্ষে হুজুর যেদিন জন্ম গ্রহণ করেছিলেন
নবীজির শুভাগমনে খুশি হয়ে হজরত সুয়াইবা ( রা ) আজাদ করে ছিলেন |(ফাতহুল বারি সরহে সহীহুল বুখারী , অম্দাতুল কারী শরহে সহীহুল বুখারী )|
এখন কথা হলো আবু লাহাবের মত
কাট্টা কাফের যদি নবীজির একদিনের
বেলাদত শরীফে খুশি হয়ে প্রতি সপ্তাহে প্রতি সোমবার তার জাহান্নামের আজাব লাগব হয়ে যায় ,
আমরা যারা মুমিন মুসলমান তারা জীবনে হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কতগুলা বেলাদত শরীফ খুশি মনে পালন করে তার
বিনিময়ে কি জান্নাত পেতে পারিনা ?
★এই প্রসঙ্গে উপমহাদেশের প্রখ্যাত হাদিস
বিশারদ অলিয়ে কামেল শায়খ আব্দুল হক
মহাদ্দেসে দেহলভী ( রহ ) বলেন ,
ﻣﻦ ﻋﻈﻢ ﻟﻴﻠﺔ ﻣﻮﻟﺪﻩ ﺑﻤﺎ ﺍﻣﻜﻨﻪ ﻣﻦ ﺍﻟﺘﻌﻈﻴﻢ ﻭﺍﻻﻛﺮﺍﻡ ﻛﺎن ﻣنﺍﻟﻔﺎﺀﺯﻳﻦ ﺑﺪﺍﺭ ﺍﻟﺴﻼم
অর্থাৎ যারা হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের
বিলাদত শরীফকে সম্মান ও তাজিম করবে এবং খুশি মনে পালন করবে সে চির শান্তির জায়গা জান্নাতেরঅধিকারী হবে |
(মাছাবাতা বিস সুন্নাহ ১ম খন্ড,খুত্বায়ে ইবনে নাবাতা)

হযরত আল্লামা জালাল উদ্দীন সূয়ুতী রাহিমামুল্লাহ আলাইহি যার সনদ সহ প্রায় ২ লক্ষ হাদিস শরীফ মুখস্থ ছিল সেই তাজুল মুফাস্সিরীন মোহাদ্দেস মুসান্নিফ সুয়ুতি রাহিমামুল্লাহ আলাইহি তিনি উনার
বিখ্যাত কিতাব " সুবলুল হুদা ফি মাওলেদে মুস্তাফা আলাইহি ওয়া সাল্লাম"" এ দুই খানা সহি হাদিস শরীফ বর্ণনা করেছেন |
পবিত্র হাদিস শরীফে এরশাদ হয়েছে "
ﻋَﻦْ ﺍَﺑِﻰ ﺍﻟﺪَّﺭْﺩَﺍﺀِ ﺭَﺿِﻰَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻨْﻪُ ﺍَﻧَّﻪﻣَﺮَّ ﻣَﻊَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻰِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍِﻟٰﻰﺑَﻴْﺖِ ﻋَﺎﻣِﺮِ ﺍﻻَﻧْﺼَﺎﺭِﻯِّ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻳُﻌَﻠِّﻢُ ﻭَﻗَﺎﺋِﻊَﻭِﻻﺩَﺗﻪِ ﺻَﻠَّﻰﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻻَﺑْﻨَﺎﺋِﻪﻭَﻋَﺸﻪِﺗَﺮْﻴِ ﻭَﻳَﻘُﻮْﻝُ ﻫٰﺬَﺍ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡَ ﻫٰﺬَﺍ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡَﻓَﻘَﺎﻝَﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺼَّﻠٰﻮﺓُ ﻭَﺍﻟﺴَّﻼﻡُ ﺍِﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﻓَﺘَﺢَﻟَﻚَ ﺍَﺑْﻮَﺍﺏَ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﺔِ ﻭَﺍﻟْﻤَﻼﺋِﻜَﺔُﻛُﻠُّﻬُﻢْﻳَﺴْﺘَﻐْﻔِﺮُﻭْﻥَ ﻟَﻚَ ﻣَﻦْ ﻓَﻌَﻞَ ﻓِﻌْﻠَﻚَ ﻧَﺠٰﻰﻧَﺠٰﺘَﻚ
অর্থাৎ হজরত আবু দ্বারদা ( রা ) হতে বর্ণিত ,
হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন হজরত আমির আনসারী ( রা ) এর গৃহে গেলেন এবং হুজুর দেখতে পেলেন আমির আনসারী ( রা ) উনার পরিবার পরিজন ও আত্বীয় স্বজনদের নিয়ে একত্রিত হয়ে খুশি মনে রাসুল পুর
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিলাদত শরীফ পাঠ করছেন | অর্থাৎ নবীজি এইদিনে পৃথিবীতে আসছেন ,পৃথিবীতে প্রত্যেকটা মাখলুক আনন্দিত
হয়ে ইত্যাদি | এই ঘটনা শ্রবণ করে হুজুর পাক
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অত্যন্ত
অনদিত হয়ে হজরত আমির আনসারীকে বললেন ,
আল্লাহ পাক আপনার জন্য উনার রহমতের
দরজা প্রশস্থ করেছেন এবং সমস্থ ফেরেস্থাগন
আপনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছেন |যে আপনার জন্য এইরূপ কাজ করবে সেও আপনার মত নাজাত ( ফজিলত ) লাভ করবে | ( সুবহান আল্লাহ )
পবিত্র হাদিস শরীফে আরো এরশাদ হয়েছে "
ﻋَﻦْ ﺍِﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻰَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﺍَﻧَّﻪٗﻛَﺎﻥَ ﻳُﺤَﺪِّﺙُ ﺫَﺍﺕَ ﻳَﻮْﻡٍ ﻓِﻰْ ﺑَﻴْﺘِﻪٖ ﻭَﻗَﺎﺋِﻊَﻭِﻻﺩَﺗٖﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻟِﻘَﻮْﻡٍ ، ﻓَﻴَﺴْﺘَﺒْﺸِﺮُﻭْﻥَ ﻭَﻳُﺤَﻤِّﺪُﻭْﻥَ ﺍﻟﻠﻪَ ﻭَﻳُﺼَﻠُّﻮْﻥَﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓَﺎِﺫَﺍ ﺟَﺎﺀَﺍﻟﻨَّﺒِﻰُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ ﺣَﻠَّﺖْﻟَﻜُﻢْ ﺷَﻔَﺎﻋَﺘِﻰْ
অর্থাৎ হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস ( রা )
নিজেই বর্ণনা করেন , একদা তিনি উনার
গৃহে সাহাবায়ে কেরামদের নিয়ে একত্রিত হয়ে হুজুর পুর নূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিলাদত শরীফ পাঠ করছিলেন |( এই দিনে হুজুর পৃথিবীতে আসছেন , স্বয়ং আল্লাহ উনার হাবিবের উপর দুরুদ সালাম দিয়েছেন )শ্রবন্কারীরাও তা শুনে আনন্দ পাচ্ছিলেন |ঠিক ওই সময় নবীজি সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখানে উপস্থিত হয়ে বললেন , তোমাদের জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে গেছে "|এই হাদিসটি বিভিন্ন হাদিস গ্রন্থে এসেছে যেমন : মাওলুদুল কবীর , আত তানভীর ফী মাওলিদিল বাশীর ওয়ান নাযার , হকিকতে মোহাম্মদী ( মিলাদ অধ্যায় ), দুররুল মুনাজ্জাম , ইশবাউল কালাম |অতএব উপরোক্ত সহি হাদিসের
মাধ্যমে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বৈধতা প্রমানিত হলো ,

হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের মিলাদ নিজেই পাঠ করেছেন |

একদিন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিম্বারে দড়িয়ে সমবেত সাহাবীগনকে লক্ষ্য করে বললেন : তোমরা বল - আমি কে ? সাহাবায়ে কেরাম বললেন আপনি আল্লাহর রাসুল | হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন :★আমি আব্দুল্লাহর পুত্র মুহাম্মদ , আব্দুল মোত্তালিবের নাতী, হাশেমের প্রপৌত্র এবং মানাফের পুত্রের প্রপৌত্র | এই হাদিসের গুরুত্ব মতেই ইমামগন চার কুরছিকে ফরজ বলেছেন |
★হুজুরে আকরাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও এরশাদ করেন:আল্লাহ তায়ালার পক্ষ হতে আমার একটি বিশেষ মর্যাদা এই যে ,"আমি খতনা অবস্থায় ভুমিষ্ট হয়েছি এবং আমার লজ্জাস্থান কেউ দেখেনি" | [তাবরানী, জুরকানী ]অন্যান্য রেওয়ায়াতে পা পবিত্র ,নাভি কর্টকৃত ,সুরমা পরিহিত , বেহেস্তি লেবাস পরিহিত অবস্থা ভুমিষ্ট হওয়ার বর্ননা এসেছে |[মাদারেঝুন্নবুয়াত]
*এছাড়া ও জঙ্গে হোনায়নেরর যুদ্ধে যখন
হাওয়াজিনের তীর নিক্ষেপে মুসলিম সৈন্যগন ছত্রভঙ্গ হয়ে পরেছিলেন , তখনও হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একা যুদ্ধ ময়দানে দাড়িয়ে বলেছিলেন "আনা নাবিয়ু লা কাযেব + আনা ইবনে আব্দুল মুত্তালিব" অর্থাৎ আমি আল্লাহর নবী ,
আমি মিথ্যাবাদী নই ,আমি আব্দুল মোত্তালিবের বংশধর |উপরোক্ত প্রথম ঘটনা টি দাঁড়িয়ে বলা এবং বর্ননা করার নামই মিলাদ ও কেয়াম । সুতরাং মিলাদ ও কেয়াম স্বয়ং রাসুল পাকের সুন্নত ।দ্বিতীয় বর্ননায় " ওয়ালাদাত "শব্দটি এসেছে | এর অর্থ হলো আমি জন্ম গ্রহন করেছি - ভুমিষ্ট হয়েছি -আবির্ভুত হয়েছি | সব বর্ননাই নবী করীম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কেয়াম অবস্থায় ছিলেন | তিনি নিজেই কেয়াম করেছেন সুতরাং বেলাদতের বর্ণনাকালে কিয়াম করা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরই সুন্নত |

নবীগনের যুগে মিলাদুন্নবী:

★১। হযরত আদম আলাইহিস সালাম এর যুগে মিলাদ: প্রত্যেক নবী নিজ নিজ যুগে আমাদের প্রিয়নবী ও আল্লাহর প্রিয় হাবিব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আবির্ভাবের সুসংবাদ দিয়ে গেছেন | হযরত আদম আলাইহিস সালাম তাঁর প্রিয় পুত্র ও প্রতিনিধি হযরত শীস আলাইহিস সালাম কে নুরে মুহাম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর তাজিম করার জন্য নিম্ন অসিয়ত করে গেছেন |
★★আনুবাদ অংশ টি নিম্নে বর্ননা করা হলোঃ
[" আদম আলাইহিস সালাম আপন পুত্র হযরত শীস আলাইহিস সালাম কে লক্ষ্য করে বললেন : হে প্রিয় বৎস , আমার পরে তুমি আমার খলিফা | সুতরাং এই
খেলাফত কে তাকওয়ার তাজ ও দৃঢ় একিনের দ্বারা মজবুত করে ধরে রেখো | আর যখনই আল্লাহর নাম ঝিকির (উল্লেখ) করবে তাঁর সাথেই মুহাম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নামও উল্লেখ করবে |তাঁর কারন এই : আমি রূহ ও মাটির মধ্যবর্তী থাকা অবস্থায়ই তাঁর পবিত্র নাম আরশের পায়ায় (আল্লাহর নামের সাথে ) লিখিত দেখেছি | এরপর আমি সমস্ত আকাশ ভ্রমন করেছি | আকাশের এমন কোন স্থান ছিলনা যেখানে মুহাম্মাদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নাম অন্কিত পাইনি? আমার রব আমাকে বেহেস্তে বসবাস করতে দিলেন | বেহেস্তের এমন কোন প্রাসাদ ও কামরা পাইনাই যেখানে মুহাম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নাম ছিলনা ? আমি মুহাম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নাম আরোও লিখিত দেখেছি সমস্ত হয়রদের স্কন্ধ দেশে , বেহেস্তের সমস্ত বৃক্ষের পাতায় , বিশেষ করে তুলা বৃক্ষের পাতায় পাতায় , পর্দার কিনারায় এবং ফেরেসতাগনের চোখের মনিতে ঐ নাম অন্কিত দেখেছি | সুতরাং হে শীস ! তুমি এই নাম বেশী বেশী করে জপতে থাক | কেননা ,ফেরেস্তাগন পুর্ব হতেই এই নাম জপনে মশগুল রয়েছেন " [ জুরকানি শরীফ ] |

হযরত ইব্রাহীম( আ:) এর মিলাদ পাঠ ও কেয়াম :

হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম এবং হযরত
ইসমাইল আলাইহিস সালাম যখন আল্লাহর ঘর
তৈরী করছিলেন , তখন ইব্রাহীম আলাইহিস
সালাম উক্ত ঘরের নির্মাণ কাজ কবুল করার
জন্য নিজের ভবিষ্যৎ সন্তানাদিদের মুসলমান
হয়ে থাকার জন্য আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ
করার পর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বা কেয়াম
করে নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
এর আবির্ভাব আরবে ও হযরত ইসমাইলের
বংশে হওয়ার জন্য এভাবে দোয়া করেছেন |
অর্থাৎ হে আমার রব ! তুমি এই আরব ভুমিতে আমার ইসমাইলের বংশের মধ্যে তাদের মধ্যে হতেই সেই মহান রাসুলকে প্রেরণ করো- যিনি তোমার আয়াত সমুহ তাদের কাছে পাঠ করে শুনাবেন ,
তাদেরকে কোরআন সুন্নাহর বিশুদ্ধ জ্ঞান শিক্ষা দেবেন এবং বাহ্যিক ও আত্বিক অপবিত্রতা থেকে তাদের পবিত্র করবেন | [সুরা বাকারা ১২৯ আয়াত ]
এখানে দেখা যায় হযরত ইব্রাহীম (আ:) ৪০০০ বৎসর পুর্বেই রাসূল (স:) মিলাদের সারাংশ পাঠ করেছেন এবং এই মুনাজাত বা মিলাদ দন্ডায়মান অবস্থাই করেছেন যা পুর্বের দুটি আয়াতের মর্মে বুঝা যায় |ইবনে কাছির তাঁর বেদায়া ও নেহায়া গ্রন্থে ২য় খন্ডে ২৬১ পৃষ্ঠায় লিখেছেন " দোয়া ইব্রাহিমু আলাইহি ওয়া সাল্লামু ওয়াহুয়া কায়েমুন
"অর্থাৎ উক্ত দোয়া করার সময় ইব্রাহীম
আলাইহিস সালাম দন্ডায়মান ছিলেন |
নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেণ " আনা দুয়াওতু ইব্রাহীমা " আমি হযরত ইব্রাহিম (আঃ)এর দোয়ার ফসল |" হযরত ইব্রাহীম ( আঃ) আল্লাহর নিকট থেকে চেয়ে আমাদের প্রিয় নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে আরবের ইসমাইল আলাইহিস সালাম এর বংশে নিয়ে এসেছেন |বর্তমান মিলাদ শরীফে রাসুলে পাঁকের
আবির্ভাবের যে বর্ননা দেয়া হয় তা হযরত ইব্রাহিম আঃ এর দোয়ার তুলনায় সামান্যতম অংশ মাত্র |
সুতরাং আমাদের মিলাদ শরিফ পাঠ ও
কেয়াম হযরত ইব্রাহীম আলাহিস সালামেরই
সুন্নাত । [ বেদায়া ও নেহায়া ২য় খন্ড ২৬১পৃষ্ঠ ]

হযরত ঈসা (আঃ) নবী এর মিলাদ পাঠ ও কেয়াম:

তিনি আখেরী জামানার পয়গম্বর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নাম ও সানা সিফাত এবং আগমন
বার্তা এভাবে বর্নণা করেছেন : অর্থাৎ "হে আমার প্রিয় রাসুল ! আপনি স্বরণ করে দেখুন ঐ সময়ের কথা যখন মরিয়মেম তনয়া ঈসা আলাইহিস সালাম বলেছেন :হে বনী ইসরাইল , আমি তোমাদের কাছে নবী হয়ে প্রেরিত হয়েছি |আমি আমার পুর্ববর্তী তওরাত কিতাবের সত্যতার সাক্ষ্য দিচ্ছি এবং এমন এক মহান রাসুলের সুসংবাদ দিচ্ছি যিনি আমার
পরে আগমন করবেন এবং তাঁর নাম হবে আহমদ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম [ সুরা আছ- ছফ ৬ ]
ইবনে কাছির বেদায়া ও নেহায়া গ্রন্থের ২য় খন্ডে ২৬১ পৃষ্ঠয় উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেছেন : " আখাতোবা ঈসা আলাইহেস সালামু উম্মাতাহুল হাওয়ারিইনা কায়েমা"" অর্থৎ হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম দন্ডায়মান(কেয়াম) অবস্থায় তাঁর উম্মৎ
হাওয়ারীদেরকে নবীজীর আগমনের সুসংবাদ দিয়ে বক্তৃতা করেছেন " | সুতরাং মিলাদ ও কিয়াম হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম এর সুন্নাত এবং নবীযুগের ৫৭০ বৎসর পুর্ব হতেই |[ বেদায়া ও নেহায়া ] 

পূর্বে আমরা হজরত আব্বাস রাদ্বি আল্লাহু তালা আনহু ও হজরত দ্বারদা রাদ্বি আল্লাহু তালা আনহু হতে বর্ণিত হাদিসে মিলাদুন্নবী পালন ও এর ফজিলত দেখেছি | এবার সাহাবায়ে কেরামদের
মধ্যে সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ৪ সাহাবী অর্থাৎ খোলাফায়ে রাশেদীনের পবিত্র জবান থেকে মিলাদুন্নবী পালনের ফজিলত শুনবো |
★★ইসলামের প্রথম খলিফা ,
হজরত আবু বকর রাদ্বি আল্লাহু তালা আনহু বলেন ,
ﻣَﻦْ ﺍَﻧْﻔَﻖَ ﺩِﺭْﻫَﻤًﺎ ﻋَﻠَﻰ ﻗِﺮﺍ ﺓَ ﻣَﻮْ ﻟِﺪِ ﺍﻟﻨَّﺒﻰُ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻛَﺎﻥ ﺭﻓﻴﻘﻲ ﻓﻰِ ﺍﻟﺠَﻨّﺔِ
অর্থাৎ- “যে ব্যক্তি মিলাদুন্নবী (সঃ) উপলক্ষ্যে এক দিরহাম খরচ করবে সে জান্নাতে আমার সঙ্গী হবে |
[ আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম,পৃষ্ঠা নং-৭ ]
★★দ্বিতীয় খলিফা হজরত উমর (রা) বর্ণনা করেন ,
ﻣَﻦْ ﻋَﻈَّﻢَ ﻣَﻮْﻟِﺪِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻰُ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓَﻘَﺪْ َﺍﺣﻴﺎﺍﻻﺳْﺎﻻَﻡُ
অর্থাৎ- “যে ব্যক্তি মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে সম্মান করলো,
সে অবশ্যই ইসলামকে জীবিত করলো |
[ আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম,পৃষ্ঠা নং-৭ ]
★★খলিফা হজরত উসমান (রা)আনহু বলেন ,
ﻣَﻦْ ﺍَﻧْﻔَﻖَ ﺩِﺭْﻫَﻤًﺎ ﻋَﻠَﻰ ﻗﺮﺃﺓ ﻣَﻮْﻟِﺪِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻰُ ﺻَﻠّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢْ ﻓَﻜَﻧَّﻤَﺎ ﺛَﻬِﻴﺪ ﻏَﺰُﻭَﺓِ ﺑَﺪَﺭ َﻭﺣُﻨَﻴْﻦُ
অর্থাৎ- “যে ব্যক্তি মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাঠ করার জন্য এক দিরহাম খরচ করল- সে যেন বদর ও হুনাইন জিহাদে শরীক হলো |
[আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং-৮ ]

★★খলিফা হজরত আলী (রা)বলেন ,
ﻣَﻦْ ﻋَﻈَّﻢَ ﻣَﻮْ ﻟِﺪِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻰ ﺻَﻠّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَ ﺳَﻠَّﻢَ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺳَﺒَﺒَﺎ ﻟِﻘﺮﺍ ﺗﻪ ﻻ ﻳَﺨﺮﺝ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﺍِﻻ َّﺑِﺎﻻِ ﻳْﻤَﺎﻥِ ﻭَﻳَﺪْﺧُﻞُ ﺍﻟﺠَﻨَّﻪَ ﺑِﻐَﻴْﺮِ ﺣِﺴَﺎﺏ
অর্থাৎ-“যে ব্যক্তি মিলাদুন্নবী (ছ) কে সম্মান করবে হবে সে ঈমানের সাথে মৃত্যুবরণ করবে এবং বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে |
[আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম,পৃষ্ঠা নং-৮]

জগৎখ্যাত, সর্বজনমান্য, সকলের নিকট অনুসরণীয় হযরত আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের দৃষ্টিতে সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, ঈদে আকবর, পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর গুরুত্ব ও ফযীলত

(১) হযরত ইমাম হাসান বসরী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন - “আমার একান্ত ইচ্ছা হয় যে, আমার যদি ওহুদ পাহাড় পরিমান স্বর্ণ থাকত তাহলে তা ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে ব্যয় করতাম। (সুবহানাল্লাহ্‌) (আন্‌ নেয়ামাতুল কুবরা)

(২) হযরত ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন - “যে ব্যক্তি মীলাদ শরীফ পাঠ বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন উপলক্ষ্যে লোকজন একত্রিত করলো এবং খাদ্য তৈরি করলো ও জায়গা নির্দিষ্ট করলো এবং মীলাদ পাঠের জন্য উত্তম ভাবে (তথা সুন্নাহ ভিত্তিক) আমল করলো তাহলে উক্ত ব্যক্তিকে আল্লাহ পাক হাশরের দিন সিদ্দীক শহীদ, সালেহীনগণের সাথে উঠাবেন এবং তাঁর ঠিকানা হবে জান্নাতে নাঈমে।” (সুবহানাল্লাহ্‌) (আন্‌ নেয়ামাতুল কুবরা)

(৩) হযরত মারুফ কারখী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন - “যে ব্যক্তি ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে খাদ্যের আয়োজন করে, অতঃপর লোকজনকে জমা করে, মজলিশে আলোর ব্যবস্থা করে,পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন নতুন লেবাস পরিধান করে, মীলাদুন্নবীর তাজিমার্থে সু-ঘ্রাণ ও সুগন্ধি ব্যবহার করে। আল্লাহ পাক তাকে নবী আলাইহিমুস্‌ সালামগণের প্রথম কাতারে হাশর করাবেন এবং সে জান্নাতের সুউচ্চ মাকামে অধিষ্ঠিত হবে।“ (সুবহানাল্লাহ্‌) (আন্‌ নেয়ামাতুল কুবরা)

(৪) হযরত ইমাম সাররী সাক্বত্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন - “যে ব্যক্তি মীলাদ শরীফ পাঠ বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করার জন্য স্থান নির্দিষ্ট করল সে যেন তার জন্য জান্নাতে রওজা বা বাগান নিদিষ্ট করলো। কেননা সে তা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মুহব্বতের জন্যই করেছে। আর আল্লাহ্‌ পাক-এর রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি আমাকে ভালবাসবে সে আমার সাথেই জান্নাতে থাকবে।” (তিরমিযি, মিশকাত, আন নেয়ামাতুল কুবরা)

(৫) সাইয়্যিদুত ত্বয়িফা হযরত জুনাইদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন - “যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আয়োজনে উপস্থিত হল এবং উপযুক্ত সম্মান প্রদর্শন করলো। সে তার ঈমানের দ্বারা সাফল্য লাভ করবে অর্থাৎ সে বেহেশ্‌তি হবে।” (সুবহানাল্লাহ্‌) (আন্‌ নি’মাতুল কুবরা)

(৬)হযরত ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন - “যে ব্যক্তি মিলাদ শরীফ পাঠ করে বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করে, লবণ, গম বা অন্য কোন খাদ্য দ্রব্যের উপর ফুঁক দেয়, তাহলে এই খাদ্য দ্রব্যে অবশ্যই বরকত প্রকাশ পাবে। এভাবে যে কোন কিছুর উপরই পাঠ করুক না কেন। (তাতে বরকত হবেই)”। (সুবহানাল্লাহ্‌) (আন্‌ নি’মাতুল কুবরা)

(৭) হযরত ইমাম রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি আরো বলেন - উক্ত মোবারক খাদ্য মীলাদ পাঠকারীর বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপনকারীর জন্য আল্লাহ পাকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে, এমনকি তাকে ক্ষমা না করা পর্যন্ত সে ক্ষান্ত হয়না। (সুবহানাল্লাহ্‌) (আন্‌ নি’মাতুল কুবরা)

(৮) হযরত ইমাম রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি আরো বলেন - যদি মীলাদ শরীফ পাঠ করে বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করে কোন পানিতে ফুঁক দেয়, অতঃপর উক্ত পানি কেউ পান করে তাহলে তার অন্তরে এক হাজার নূর ও রহমত প্রবেশ করবে। আর তার থেকে হাজারটি বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ রোগ দূর হবে। যে দিন সমস্ত ক্বলব (মানুষ) মৃত্যুবরণ করবে সেদিনও ঐ মীলাদুন্নবীর পানি পানকারী ব্যক্তির অন্তর ম”ত্যু বরণ করবে না। (সুবহানাল্লাহ্‌) (আন্‌ নি’মাতুল কুবরা) 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

রামপাল

5/রামপাল/feat-tab

সাম্প্রতিক

5/সাম্প্রতিক/feat-tab

বাগেরহাট

5/বাগেরহাট/feat-tab

Facebook

Search This Blog

এখানে সার্চ করুন

জাতীয়

4/জাতীয়/grid-big

রাজনীতি

6/রাজনীতি/grid-small

সংবাদ শিরোনাম


Ads

Ads

Ads

Ads

Ads

Ads

সর্বশেষ

3/recent/post-list

আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক/feat-big