সাইফুল্লাহ তারেক, আটরা গিলাতলা প্রতিনিধি: নগরীর খানজাহান আলী থানার বিভিন্ন মুদি ও চায়ের দোকানে মিলছে অ্যান্টিবায়োটিকসহ নানা রোগের ওষুধ! মুদি ও চায়ের দোকানদাররা বিভিন্ন মালামাল বিক্রির পাশাপাশি চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই পুরোদমে বিক্রি করছেন এসব ওষুধ। ওষুধ বিক্রির সরকারি বিধি—বিধান থাকলেও প্রশাসনের নজরদারির অভাবেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।অনুসন্ধানে জানা গেছে,থানা এলাকার একাধিক মুদি ও চায়ের দোকানে অহরহ মিলছে প্যারাসিটামল। এ ছাড়াও গ্যাস্টিক, ব্যথানাশক ট্যাবলেটসহ বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিকও পাওয়া যায় এসব দোকানে। এভাবে চলতে থাকলে জনজীবন মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা স্বাস্থ্যবিদদের।সরেজমিনে জানা যায়, যেকোনো বয়সের মানুষের জ্বর, সর্দি, কাশি, মাথাব্যথা, শরীর ও বুক ব্যথা, এসব রোগের জন্য এখন আর চিকিৎসকের কাছে যেতে হয় না। রোগের বর্ণনা দিলে মুদি ও চায়ের দোকানদার ওষুধ দিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে বলে দেয় খাওয়ার নিয়মও। এখানে ওষুধ নিতে কোনো টেস্টেরও প্রয়োজন হয় না, তাই গ্রামের অসচেতন ও হতদরিদ্র মানুষেরা বিভিন্ন রোগের জন্য এখান থেকেই ওষুধ কিনছেন।এমনকি শিশুদের ওষুধও দেওয়া হচ্ছে এসব দোকান থেকে। এমনকি এসব ওষুধের মেয়াদ আছে কিনা, তাও না দেখেই বিক্রি করা হয়। ফলে মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবন যেকোনো সময় পড়তে পারে ভয়ঙ্কর ঝুঁকির মুখে। থানা এলাকার পাড়িয়ারডাঙ্গা গ্রামের মুদি দোকানী মোঃ সামাদ সিকদার বলেন আমি জটিল কোনো রোগের ওষুধ বিক্রি করি না। গ্যাস, মাথাব্যথা, জ্বর, কাশি— এ ধরনের রোগের ওষুধ বিক্রি করি। এতে মানুষের উপকারই হয়।’ মুদি দোকানে ওষুধ বিক্রির কোনো প্রকার অনুমতি আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দিন দিন এর প্রবণতা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, থানা এলাকার ২ টি ইউনিয়ন ও কেসিসির ১ টি ওয়ার্ডের ভেতরে মুদি দোকানের মধ্যে অধিকাংশ দোকানে এ অবস্থা চলে আসছে। চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য হাসপাতাল, কমিউনিটি ক্লিনিক, সাব সেন্টার ১০ —১৫টি প্রাইভেট ক্লিনিক ও হাসপাতাল এবং অসংখ্য ওষুধের দোকানসহ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান থাকার পরও কেন এই সব জীবনরক্ষাকারী ওষুধ মুদির দোকানে বিক্রি হচ্ছে সেটির সঠিক উত্তর দিতে পারেনি এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো মহল। অথচ এসব দোকানে নেশা ও যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট, দামি দামি এন্টিবায়োটিকসহ হাই প্রেসারের অনেক মূল্যবান ওষুধ তারা মজুত রেখে না বুঝেই বিক্রি করছে। তাদের বিক্রির তালিকায় যেসব ওষুধ সাধারণত দেখা যায় সেগুলোর মধ্যে রয়েছে— সিপ্রোসিনফ্লক্সাসিন, এজিথ্রোমাইসিন, টাইমোনিয়াম, ডাইক্লোফেনাক, ড্রোটাভেরিন (নো—স্পা), প্যারাসিটামল, সিটিরিজিন, রেনিটিডিন, ওমিপ্রাজল, ইসোমিপ্রাজল, কিটোরোলাক, এসিক্লোফেনাক, ন্যাপ্রোক্সেন, ইটোরিকক্সিব, মেট্রোনিডাজল ইত্যাদি জেনেরিকে নামের বিভিন্ন গ্রুপের ওষুধ।এ বিষয়ে কয়েকজন ওষুধ ব্যবসায়ী জানান, অধিকাংশ মুদি দোকানে শুধুমাত্র জেনেরিকের ওষুধ পাওয়া যায় না। তারা অ্যান্টিবায়োটিক, হাই প্রেসার, ডায়াবেটিক, সরকারি ওষুধসহ বিভিন্ন রোগের ওষুধ বিক্রি করে থাকেন। পাশাপাশি যৌন উত্তেজক ওষুধও বিক্রি করেন। যেটা মানবদেহের জন্য চরম ক্ষতিকর। এ ব্যাপারে থানা এলাকার একাধিক ফার্মেসি মালিকের সাথে কথা বলে জানা যায় ওষুধ ব্যবসায়ীদের মধ্যে ঐক্য না থাকায় তারা এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারছে না। তাছাড়া প্রশাসনের কাছে এ ব্যাপারে বার বার অবহিত করলেও তাদের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না। জেলা পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করে এই সমস্যার সমাধান কি করে করা যায় সে ব্যাপারে অতিদ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে প্রশাসনে কর্মরত কর্মকর্তাদের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অচিরেই সমিতির পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দায়ের বিষয়ে পদক্ষেপ নেবো। এতদিন আমরা ওষুধ ব্যবসায়ীরা জোরালো কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করিনি। ফলে, যা হবার তাই হয়েছে। এভাবে চলতে পারে না।
0 মন্তব্যসমূহ