Ticker

6/recent/ticker-posts

Ad Code

Responsive Advertisement

নারী উদ্যোক্তা রুপার সফলতার গল্প




 
সফলতার গল্পঃ-
 স্বচ্ছলতা  সংসার হলেও নারী উদ্যোক্তা হয়ে একটি নারী উন্নয়ন সংগঠন গড়ে তোলেন রুমানা আক্তার রুপা। পরিশ্রম, নিষ্ঠা, সততা আর মেধাকে পুঁজি করে পা বাড়িয়েছেন অসহায় নারীদের ভাগ্যউন্নয়নে। এই এগিয়ে চলাই তাকে ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোক্তা থেকে আজ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের অনুকরণীয় একজন নারী হিসেবে দাঁড় করিয়েছে সমাজে। রুপা নানা প্রতিকূলতাকে জয় করে আজ স্বাবলম্বী নারী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি নিজে স্বাবলম্বী হয়ে আরও ৫০ জন নারীকে কর্মসংস্থান করে দিয়েছেন। রুপা ১৯৮৯ সালে ফকিরহাট উপজেলার সমভ্রান্ত সরদার পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতা সরদার নিয়ামত আলী ফকিরহাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ছিলেন এবং মাতা নুরানী আসমা ছিলেন গৃহিণী। তিনি সমভ্রান্ত সাবলম্বী নারী হয়েও গরিব, অসহায় এবং নির্যাতিত নারীদের কল্যানে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেছেন। তার স্বামী একজন সরকারি কর্মকর্তা। কাজদিয়া উপজেলা সদরে নিজস্ব ২ তলা ভবনে তার বসবাস। রূপার ২ টি কন্যা সন্তান রয়েছে। নিজের সংসারের কাজের ফাঁকে পরিকল্পিভাবে সময় বের করে নির্যাতিত নিপিড়িত খেটে খাওয়া নারীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। একজন সমভ্রান্ত ধনি নারী হওয়া সত্ত্বেও গরিবের জন্য কাজ করছেন ভাবতে অবাক লাগে। তিনি জনসেবক পিতার কন্যা বলেই এমনটা সম্ভব মনে করছেন সুশিল সমাজের লোকেরা। রুপা দক্ষ একজন সংগঠক ও চরিত্রবান নারী হিসেবে সমাজে পরিচিত। তার সেবামূলক সকল কর্মকান্ডে এলাকাবাসি খুশি। সে কখনো চিকিৎসা ক্যাম্প কখনো রক্তদান কর্মসূচি কখনো গরিব ও অসহায়দের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তার এ সকল কর্মকান্ডে পরিবারের সম্মান বৃদ্ধি করে বলে তিনি মনে করেন। স্বচ্ছল সংসার, উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়েও নানা প্রতিকুলতা উপেক্ষা করে অসহায় দুস্থ নারী সংগঠনের হাল ধরেন রুপা। পরিশ্রম, নিষ্ঠা, সততা আর মেধাকে পুঁজি করে পা বাড়িয়েছেন এ কর্মকান্ডে। সাফল্য একদিন আসবেই এমন আশায় বুক বেঁধে নেমে পড়েন কর্মের সন্ধানে। এই এগিয়ে চলাই আজ তাকে ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোক্তা ও সফল একজন নারী হিসেবে দাঁড় করিয়েছে সমাজে। রুপা নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে প্রতিকূলতাকে জয় করে আজ স্বাবলম্বী নারী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি নিজে স্বাবলম্বী হয়ে আরও ২০ জন নারীকে কর্মসংস্থান করে দিয়েছেন। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, শুরুটা হবে খাবারের ব্যবসার মাধ্যমে। স্বল্প পুঁজি নিয়ে রুপা ক্ষুদ্র পরিসরে হোম ডেলিভারি খাবার সার্ভিস চালু করেন। প্রতিষ্ঠানের নাম দেন মেসার্স রুপা এন্টারপ্রাইজ। হোম ডেলিভারি সার্ভিস থেকে নানা ধরনের পিঠা, কেক, মিষ্টি, বেকারি আইটেম, সাদা ভাত, বিরিয়ানি সরবরাহ শুরু হয় রূপসার বিভিন্ন অনুষ্ঠান সহ নানা স্থানে। রুপা বলেন, সাফল্য একদিনে আসে না।

সাফল্যর জন্য প্রয়োজন সময়, মেধা আর ধৈর্যের। বিভিন্ন স্থানের বড় বড় অর্ডার পেতে শুরু করেন মেসার্স রুপা এন্টারপ্রাইজ। ধীরে ধীরে এ ব্যবসার প্রসার ঘটতে থাকে। পুঁজির পরিমাণও বেড়ে যায়। এখানেই রুপা থেমে নেই। যুব উন্নয়ন থেকে ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তার প্রশিক্ষণ নেন। আগে থেকে সেলাই ও কার্টিং এর কাজ শেখেন তিনি। সেটা কাজে লাগাতে শুরু করেন। প্রশিক্ষণ নেন যুব উন্নয়নের। পাশাপাশি শুরু করেন বুটিক হাউস ব্যবসা। সেটাও আলোর মুখ দেখতে থাকে। আলাপচারিতায় রুপা জানান, হোম ডেলিভারি খাবারের প্রতিষ্ঠানে কয়েক জন ও বুটিক হাউসে ৫০ জন নারী কাজ করছে প্রতিদিন। বুটিকের কাজ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি হয়। তাছাড়া নিজ হাতে তৈরী বিভিন্ন পন্য যেমন আচার, রূপচর্চায় ব্যবহৃত উপকরণ এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ফুলের মালা ও ফুল সংগ্রহ করে থাকেন। তিনি বলেন, নিজেই আজ স্বাবলম্বী নন, ২০ জন দরিদ্র নারীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পেরেছেন। এতে তিনি আনন্দিত। রুপার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নারী শ্রমিক শিলা রানী নাথ, ঈষিকা তাবাস্সুম, শিমুল বেগম, নোনালী বেগম, মমতাজ বেগম, রূপা খাতুন, ফারিয়া ইয়াসমিন, ফারজানা ইয়াসমিন তমা, রিয়া আক্তার, নাজমিন বেগম, রুমানা আক্তার, ফালগুনি পাল, সুমাইয়া সুলতানা, সাবিনা ইয়াসমিন সহ আরও বেশ কয়েকজন নারীর সঙ্গে কথা হয়। তারা বলেন, অভাব আমাদের আষ্টেপৃষ্ঠে ধরেছিল। অভাব আর অনটন যেন মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় অভিশাপ। রুপা আপার এই প্রতিষ্ঠানে সংসারের কাজের পাশাপাশি আমরা কাজ করছি। এখান থেকে যে পারিশ্রমিক পাই, তাতে আমরা মোটামুটি সচ্ছল হয়েছি। আমাদের কমে গেছে দরিদ্রতা। টাকা পাচ্ছি, নিজেদের ও সন্তানদের প্রয়োজন মেটাতে স্বামীর মুখের দিকে তাকাতে হয় না।রুপা বললেন, সামাজিক ব্যবস্থায় নারীরা এখনো পিছিয়ে রয়েছে। ক্ষেত্র বিশেষ নারীরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারছেন না। ইচ্ছে আছে নারীদের কল্যাণে, দুস্থ, গরিব, অসহায় নারীদের সহায়তায় ও সাবলম্বী করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার। নিজের স্বল্প পুঁজি খাটিয়ে আজ ৫৫ নারীকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করতে প্রস্তুতি গ্রহন করেছি। সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা পেলে হয়তো নারীদের উন্নয়নে আরেকটু এগোতে পারব। সমাজের পিছিয়ে পড়া, অবহেলিত, নির্যাতিত নারীদের নিয়ে সমাজ বিনির্মাণে কাজ করতে চাই। তাদের স্বাবলম্বী করতে চাই। আর এই উদ্দেশ্য নিয়েই আমার এই পথচলা অব্যাহত থাকবে। এ ব্যাপারে রূপসা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তাহিরা খাতুন বলেন রুপার মাধ্যমে গঠিত নারী সংগঠনটি খুব সুন্দরভাবে পরিচালিত হচ্ছে। সংগঠনকে সরকারী কোন সহায়তা করতে পারলে দুস্থ নারীদের আরো কর্মসংস্থানের জায়গা তৈরী হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাসরিন আক্তার বলেন আজ নারীরা কোথাও অবহেলিত নেই। তারা ছোট ছোট সংগঠন ও উদ্যোক্তা তৈরী করে সমাজের বিভিন্ন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করে নিজেদের জীবনমান উন্নয়ন করছে। সমাজের বিত্তবান ও প্রভাবশালীরা তাদের সহায়তা করলে সংগঠনটি আরো ভালোভাবে পরিচালিত হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

রামপাল

5/রামপাল/feat-tab

সাম্প্রতিক

5/সাম্প্রতিক/feat-tab

বাগেরহাট

5/বাগেরহাট/feat-tab

Facebook

Search This Blog

এখানে সার্চ করুন

জাতীয়

4/জাতীয়/grid-big

রাজনীতি

6/রাজনীতি/grid-small

সংবাদ শিরোনাম


Ads

Ads

Ads

Ads

Ads

Ads

সর্বশেষ

3/recent/post-list

আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক/feat-big