Ticker

6/recent/ticker-posts

Ad Code

Responsive Advertisement

শুক্রবারকে সপ্তাহের সেরা দিন বলা হয় কেন?








মুফতি মাওলানা মুহাম্মদ আবুল কাশেম।
ইসলামিক লেখক ও গবেষক

ইসলাম ধর্ম অনুসারীদের জন্য পবিত্র জুমার দিন অত্যন্ত কাঙ্ক্ষিত ও রহমত এর একটি দিন। শুক্রবারকে এই পবিত্র দিন বলা হয়।

দরিদ্র মুসলমানদের জন্য এদিনটি হজের দিন। আবার মুমিন মুসলমানদের জন্য এ দিনটি ঈদের দিন। অর্থাৎ এ দিনটি মুসলমানদের কাছে সপ্তাহের সেরা দিন। ধনী-গরীব ছোট বড় সবাই একসাথে জুমার নামাজ আদায় করে থাকে। এদিনের জুমার নামাজের মাধ্যমে সারা বিশ্বের কাছে মুসলিম ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, ভাতৃত্বের এক অসাধারণ নিদর্শন তুলে ধরে।

আল্লাহ বলেন, `হে বিশ্বাসীগণ! যখন জুমআর নামাজের আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা কেনাবেচা বন্ধ করে আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও। এটা তোমাদের নিজেদের কল্যাণের জন্যেই, যদি তোমরা বুঝতে!।` (সূরা জুমআ` : আয়াত ৯)। হাদিসেও জুমাআ`র নামাজের অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। ঘোষিত হয়েছে তা আদায়কারীদের জন্য অনেক পুরস্কার।

প্রথম হিজরী সনে নবী (সা.) মক্কা ছেড়ে মদীনায় গেলেন। তিনি শুক্রবার সেখানে পৌঁছালেন। এই জন্য শুক্রবারকে গুরুত্বপূর্ণ ধরা হয়।

শুক্রবারকে পবিত্র কেন বলা হয়?
বনি সালেম গোত্রের উপত্যকায় গেলে জোহর নামাজের সময় হয়ে যায়। সেখানে তিনি ইতিহাসের প্রথম জুমার নামাজ আদায় করেন। অর্থাৎ তিনি যোহর নামাজের পরিবর্তে জুমার নামাজ আদায় করেন।

তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এর সূচনা হয় আরো পরে। রাসুলুল্লাহ (সা.)এর মদিনায় যাওয়ার পর এবং জুমার নামাজ ফরজ হওয়ার আগে একবার মদিনার আনসার সাহাবিরা আলোচনায় বসেন। তারা উত্থাপন করলেন যে, ইহুদিদের একত্রিত হওয়ার জন্য সপ্তাহের একটি নির্দিষ্ট দিন রয়েছে। নাসারারাও সপ্তাহে একদিন একত্র হয়। তাই আমাদের জন্য সপ্তাহে একটি নির্দিষ্ট দিন হওয়া প্রয়োজন, যেদিনএ আমরা সবাই সমবেত হয়ে আল্লাহকে স্মরণ করব এবং নামাজ আদায় করব।

এরপর সেই আলোচনায় উঠে আসলো, শনিবার ইহুদিদের আর রোববার নাসারাদের জন্য নির্ধারিত। তারা শুক্রবারকে গ্রহণ করলেন এবং তারাই এ দিনকে জুমার দিন নামকরণ করলেন (সীরাতুল মুস্তাফা ও দারসে তিরমিজি)। শুক্রবারকে গ্রহণ করা ছিল সহিহ সিদ্ধান্ত।

শুক্রবার কীভাবে সর্বোত্তম?
আসলে জুমার দিন সপ্তাহের সাত দিনের মধ্যে সর্বোত্তম দিন। হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহ আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “সূর্য উদয় হয়েছে এমন দিনগুলোর মধ্যে সর্বোত্ত দিন জুমআ`র দিন। এদিন হজরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা হয়েছে। এদিন তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়। এদিন তাকে জান্নাত থেকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়। এদিনই কিয়ামাত সংঘটিত হবে। (মুসলিম, তিরমিজি, নাসাঈ)

এদিনে মুসলমানেরা একত্রে মিলিত হওয়ার সুযোগ পায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি কোনো কারণ ছাড়া জুমআ`র নামাজ ছেড়ে দিবে, আল্লাহ তাআলা তার অন্তরে মোহর মেরে দিবেন। (মুসলিম)

জুম্মার দিনে একটি সময় রয়েছে যে সময়ে দোয়া করলে আল্লাহ তায়ালা দোয়া কবুল করেন। তবে এই সময়টি বা মুহূর্তটিকে অজ্ঞাত করে রাখা হয়েছে। যাতে মানুষ পুরো জুম’আর দিনটিকে গুরুত্বসহকারে অনুভব এবং এই মুহূর্তটিকে অনুসন্ধান করতে থাকে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “জুমআ`র দিন এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে যদি কোনো বান্দাহ ঐ মুহূর্তে দাড়িয়ে সালাতরত অবস্থায় আল্লাহর নিকট কোনো কিছু প্রার্থনা করে আল্লাহ তাআলা তা অবশ্যই দিবেন। (বুখারি ও মুসলিম)

শুক্রবারের জুম্মার সময়ঃ
সময়টি কখন- এ ব্যাপারে মতভেদ আছে। তবে হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মত হলো দুটি-

১. ইমাম মিম্বারে বসা থেকে নিয়ে নামাজ শেষ করা পর্যন্ত সময়- হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “ইমাম মিম্বারে বসা থেকে নিয়ে সালাত শেষ করা পর্যন্ত। (মুসলিম, ইবনু খুজাইমা, বয়হাকি)

২. যাদুল মাআ`দ-এ বর্ণিত আছে- মুহূর্তটি হচ্ছে জুমআ`র দিন আছরের নামাজ আদায়ের পর।

সারাবছর সাদাকা করার চেয়েও রমজানের সাদাকা করা যেমন উত্তম, ঠিক তেমনি অন্যান্য দিনের তুলনায় জুমার দিনে সাদাকা করা উত্তম। কা`ব ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, “জুমআ`র দিনই সাদকা করা অন্যান্য দিন সাদকা করার তুলনায় অধিক ছাওয়াব ও গুরুত্বপূর্ণ। (মুসলিম)

জুমআ`র দিন জান্নাতিদের সঙ্গে আল্লাহ তাআলা সাক্ষাৎ করবেন। তাফসিরে এসেছে- আল্লাহ তাআলা প্রতি জুমআ`র দিন জান্নাতিদের সাক্ষাতের জন্য প্রকাশ্যে আসেন।

এদিন আল্লাহ বান্দার গুনাহ মাপ করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি জুমআ`র দিন গোলস করল, যথাযথ পবিত্রতা অর্জন করল, তেল লাগাল এবং ঘর থেকে আতর খুশবু লাগিয়ে বের হল, দুই ব্যক্তির মাঝে ফাঁক করে সামনে গেল না। অতপর তার তকদিরে যত নামাজ পড়া নির্ধারিত ছিল তা পড়ল, ইমামের খুতবার সময় চুপ থাকল, তাহলে তার এ জুমআ` থেকে পরবর্তী জুমআ` পর্যন্ত সংঘটিত গুনাহসমূহ মাপ করে দেয়া হবে। (বুখারি)

এছাড়াও নফল রোজা ও তাদের সওয়াব লাভ, জাহান্নামে আগুন নিভিয়ে রাখার দিন হিসেবে, এদিনে দিনে অথবা রাতের সময় মৃত্যুবরণের শুভ লক্ষণ সহ নানা বিধ ফজিলত রহমত বরকত রয়েছে।

আমরা নিয়মিত জুমার নামাজ আদায় করে, বাস্তব জীবনে ইসলামের পূর্ণাঙ্গ অনুসরণ করে আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টায় সচেতন হই। রাব্বুল আলামীনের রহমতে বরকতে ভরে উঠুক আমাদের জীবন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

রামপাল

5/রামপাল/feat-tab

সাম্প্রতিক

5/সাম্প্রতিক/feat-tab

বাগেরহাট

5/বাগেরহাট/feat-tab

Facebook

Search This Blog

এখানে সার্চ করুন

জাতীয়

4/জাতীয়/grid-big

রাজনীতি

6/রাজনীতি/grid-small

সংবাদ শিরোনাম


Ads

Ads

Ads

Ads

Ads

Ads

সর্বশেষ

3/recent/post-list

আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক/feat-big