জি এম কামরুজ্জামান টুকু
.....................................
সেদিন সময় টা ছিল ২৪ অক্টোবর ২০২০ তারিখ সোমবার আনুমানিক দুপুর দুই (২) টা। গ্রামের বাড়ি থেকে শহরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে রুপসা ঘাটে ট্রলারে উঠেছি। একটু পরেই আমার পাশে এসে বসলেন একজন বৃদ্দ্বা মহিলা। প্রথমে ভালো ভাবে খেয়াল করিনি,মাঝি এসে ট্রলার ভাড়া চাইতেই ভাড়া বের করেছি, চোখ পড়লো সেই বৃদ্দ্বা মহিলার দিকে, বৃদ্দ্বা মহিলার কাছে ও ভাড়া দাবি করলেন ট্রলার মাঝি। মনে হচ্ছিলো উনি সম্ভবত ভিক্ষা করেই জীবীকা নির্বাহ করেন,নোংরা একটা শাড়ি পরে আছেন। মাঝিকে বল্লাম উনার কাছ থেকেও ভাড়া নিতে হবে? আমি উনার ভাড়া ও দিয়ে দিলাম। উনি অবাক বিষ্ময়ে আমার দিকে তাকালেন,বললেন ভালো থেকো বাবা! গায়ে-মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। সামান্য তিন(৩) টাকা ভাড়া দেওয়াতে মানুষ এতো খুশি হতে পারে আমি ভাবতেই পারিনি। দেখতে পেলাম উনার চোখের কোনা গড়িয়ে নোনা জল বেরিয়ে আসছে, আমিও নিজেকে সামলাতে পারলাম না,আমার Sunglass এর ভিতর দিয়ে ও চোখের জল বেরিয়ে আসলো। জীবনে মা-বাবা,সন্তান-স্ত্রী, ভাই-বোন ও আত্নীয় স্বজনের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে ও তাদের ভিতরে এই ধরনের শুকরিয়া প্রকাশ আমি পূর্বে কখনও দেখিনি। আমি কিছু সময় হতবাক ও বিষ্ময়কর দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম আমার সদ্য পরিচিত ছিন্নমূল মায়ের দিকে। আমি মনে মনে ভাবলাম আমারা তো প্রতিনিয়ত আপনজনদের সাথে Selfi তুলে ফেসবুকে কতই না পোস্ট দিয়ে থাকি! এই পথের মা-ছিন্নমুল মায়ের দোয়া মহান আল্লাহ পাকের আরশে পৌছাবে কিনা তাও জানিনা, হয়তো উনি কোনো পরহেজগার বা কামেল ব্যাক্তি ও নন,কিন্তু উনার খুশি হওয়া বা তৃপ্ত হওয়ার ভংগী দেখে সত্যিই আমি অভিভূত ও সন্তুষ্ট হলাম। তাই ভাবলাম উনার সাথে একটি Selfi তুললে কেমন হয়?
উনার সম্মতি নিয়েই Selfi তুললাম।অনেক অনেক ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন উনার জন্য।
মানুষের সামান্য ভালো ব্যাবহারে ও
কিঞ্চিৎ ভালবাসায় অনেক ভালো থাকুক
পথের মায়েরা - ছিন্নমূল মায়েরা।
বেচে থাকুক "বিশ্বাস,ভালবাসা,
কৃতজ্ঞতা ও শুকরিয়া।"
0 মন্তব্যসমূহ