Ticker

6/recent/ticker-posts

Ad Code

Responsive Advertisement

স্মৃতি কথা



শেখ নুরইসলাম

এখনো আমি আগের মতো কিন্তু বেড়েছে বয়স আর পরিবর্তন হয়েছে স্থান। সে জন্য সব সময় বলার চেষ্টা করি কেউকে ছোট করতে নেই,সারা জিবন মানুষ এক থাকেনা কেউকে ভালো না লাগতে পারে সে জন্য কখনো তাকে অপমান না করা। সবাই তোমার মতো হবে এটা কখনো ভাবা যাবে না, এক এক জন এক এক রকম তবে কারো জন্য নিজের জিবনে প্রশ্নের মুখে দাড় করানো যাবে না। ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে,আপমানিত হয়ে সম্মান করা শিখতে হবে।সকলেরি জানা আছে যে জিবন কারো জন্য থেমে থাকে না শুধু থেমে থাকে স্মৃতি।
ছোট থেকে গ্রামে বড় হয়েছি, কথা বলা থেকে চলাফেরা সব কিছু শহরের লোক থেকে অন্যরকম। ছোট বেলায় সকাল শুরু হতো মোরগের ডাকে,বিকেল হতো কখন জানা নেই কারন স্কুল থেকে ফিরে চলে যেতাম খেলার মাঠে তার পর মা যতক্ষণ পর্যন্ত লাঠি নিয়ে দৌড়ানি না দিত ততক্ষণ পর্যন্ত সন্ধা হতো না।শীতের শুরু থেকে আষাঢ় মাস আগমনের আগ পর্যন্ত চলত বনভোজনের মেলা,যেখানে প্রায় প্রতিদিন কোনো না কোনো প্রোগাম থাকত।শীতের শুরুতে যখন আমন ধান ঘরে তোলার ধুম পড়ত ঠিক তখনি আমরা লেগে পড়তাম ধান মড়াইয়ের কাজে।তখন কার সময়ে ধান মড়াই করা হতো গরু দিয়ে, কিভাবে অনেকেই জানেন। ( কয়েকটা গরুকে একসাথে সারিবদ্ধ করে বেধে কাটা ধান পরিষ্কার ওঠানে বিছিয়ে দিত তার উপর গরু চড়াতো / ঘোড়াতো যতক্ষণ না পর্যন্ত ধান আর খড়/ কুটা আলাদা না হয়।)খড়/ কুটা যখন আলাদা করে গাদা দিয়ে রাখা হতো তখন আমরা ওই গাদার ভেতর লুকোচুরি খেলতাম। শীতে যখন গাছের পাতা ঝড়ত তখন আমরা শিস ( ছোট ডাল) কুড়াতাম এবং প্রতি সপ্তাহে সেগুলাকে কাঠ হিসেবে বনভোজনের জ্বালানি বানাতাম।
এভাবেই কাটছিলো দিন, তবে স্কুল জিবনে আমার চিন্তা ধারা অনেকটা বন্ধুদের মাধ্যমে জাগ্রত হয়েছে। যখন প্রাইমারিতে পড়াশোনা করি তখন স্কুলে প্রতিবছর বার্ষিক ক্রিয়া প্রতিযোগিতা হতো,সেখানে অনেক ধরনের খেলা-দুলা, আবৃত্তি, নাচ-গান,অভিনয়ের ব্যবস্থা ছিলো কিন্তু কখনো আমি এসব বিষয়ে অংশগ্রহণ করে কোনো পুরষ্কার আনতে পারিনি এ নিয়ে অনেকে অনেক কিছু বলত। তো একদিন আমি চিন্তা করলাম যে সান্তনা পুরষ্কার হলেও এনে দেখাতে হবে আমি পেরেছি। এই চিন্তা করে আমি কয়েকটি ইভেন্টে অংশ নিলাম এক এক করে সব কিছুতে হেরে গেলাম বেঁচে রইল মোরগ লড়াই। যা করে হোক এটাতে পুরষ্কার নিতে হবে, সেই চিন্তা মাথায় রেখে মনোযোগ দিলাম খেলায়। খেলার মাঝ পথে চিন্তা করলাম এসব তো আমাকে দিয়ে হবে না তবে কেন এর পিছনে আমি দৌড়াচ্ছি।যা আমাকে দিয়ে হবে না তাই করে নিজেকে কষ্ট দেওয়া ছাড়া আর কিছু না, সেই থেকে পরিবর্তন ঘটল আমার জিবনের তার পর থেকে কোনো কিছু পাবার জন্য যেটা আমাকে দিয়ে হবে না / আমি পারব না সেদিকে কখনো অগ্রসব হয় নি।যেটি পারি বা মন বলে পারব সেদিকে অগ্রসব হবার চেষ্টা করেছি। 
তবে এই মন বলে পারব এই কথাটি বিশ্বাস করে জিবনের সব থেকে বড় একটি ভুল করেছি যা মনে হয়না মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত ভুলতে পার। ভুলটা ছিলো একটা মেয়েকে মন দেওয়া যেটি আমার প্রথম।যখন আমি কলেজে পড়ি ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে, সব সময় আমি চাইতাম নিরিবিলি থাকতে তেমন কোনো বাজে আড্ডা দিতাম না।হঠাৎ একদিন ক্লাসের সামনে দাড়িয়ে বন্ধুদের সাথে কথা বলছি, আমি একটু হাস্যরসিক ছিলাম। সবার মাঝে মুহুর্তের মধ্যে জায়গা করে নিতাম,সে জন্য সকলে আমাকে রসিক বলে ডাকত।কেহ যদি প্রেম পত্র লিখত তবে আমার কাছে এসে তার প্রিয় ব্যক্তির নাম দিয়ে একটা কবিতা লিখে নিয়ে যেত।আমি তখনো পর্যন্ত প্রেমে পড়িনি এবং প্রেম করার কোনো ইচ্ছা আমার ছিলো না,তবে একদিন আমার এক বন্ধু এসে বলল চল নতুন ফাস্ট ইয়ারে ভর্তি হতে কারা এসেছে দেখে আসি।আমি ও সরল মনে গেলাম আর সেই সরল মনটা হলো জিবনের কাল।
ভিড়ের ভেতর সকলে কিন্তু সবার দিকে নজর দিলেও আলাদা করে নির্দিষ্ট একজনের প্রতি বেশি নজর দেই সে যে কোনো জায়গা হোক না কেন । সেদিন আমিও কেন জানিনা এক দিকে তাকিয়ে ছিলাম, বন্ধু বুঝতে পারল আমার লক্ষ্মণ কী।
আমরা সেখান থেকে চলে আসলাম বন্ধুরা সকলে বলল তাকে আমার পক্ষ থেকে প্রেম নিবেদন করবে,আমি না করে দিলাম।তার মন আগে বুঝতে হবে সে আমি তার মতো হতে পারব কী আর সে আমার মতো হতে পারব কী।বুঝে শুনে কাজ করতে হবে এভাবে চলে গেল প্রায় কয়েক মাস,আমার এইসএসসি পরিক্ষা প্রায় নিকটে তাই চিন্তা করলাম তাকে মনের কথাটা বলেই দেই। এই কয়েক মাসে সে ও আমার চলাফেরা দেখা কিছুটা অনুমান করতে পেরেছে এবং শুনেছে অন্যকারো,কাছ থেকে যে আমি তাকে পছন্দ করি। মনের কথা বলার জন্য মনটা উৎসুক করতেছে বলে দেখি,বন্ধুরা সবাই তো প্রেম করে আমি ও করি না।যদি সে না করে তা হলে ভালো, করলে জিবন সঙ্গী হিসেবে পাশে থাকার চেষ্টা করব এই চিন্তা সব সময় ছিলো।
যখন তাকে বলতে গেলাম নিজের মনের কথা সেদিন জিবনের বড় শিক্ষা পেয়েছি,তার ভাষ্য অনুযায়ী আমি আনকালসার,আনস্মার্ট,শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতে পারি না,গ্রামের খ্যাত আরো কতো কী। এখনো আমি আগের মতো কিন্তু বেড়েছে বয়স আর পরিবর্তন হয়েছে স্থান। সে জন্য সব সময় বলার চেষ্টা করি কেউকে ছোট করতে নেই,সারা জিবন মানুষ এক থাকেনা কেউকে ভালো না লাগতে পারে সে জন্য কখনো তাকে অপমান না করা। সবাই তোমার মতো হবে এটা কখনো ভাবা যাবে না, এক এক জন এক এক রকম তবে কারো জন্য নিজের জিবনে প্রশ্নের মুখে দাড় করানো যাবে না। ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে,আপমানিত হয়ে সম্মান করা শিখতে হবে।সকলেরি জানা আছে যে জিবন কারো জন্য থেমে থাকে না শুধু থেমে থাকে স্মৃতি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

রামপাল

5/রামপাল/feat-tab

সাম্প্রতিক

5/সাম্প্রতিক/feat-tab

বাগেরহাট

5/বাগেরহাট/feat-tab

Facebook

Search This Blog

এখানে সার্চ করুন

জাতীয়

4/জাতীয়/grid-big

রাজনীতি

6/রাজনীতি/grid-small

সংবাদ শিরোনাম


Ads

Ads

Ads

Ads

Ads

Ads

সর্বশেষ

3/recent/post-list

আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক/feat-big