সাইফুল্লাহ তারেকঃ খানজাহান আলী থানা এলাকাতে শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। বিভিন্ন জাতের সবজির চারা রোপণ ও পরিচর্যায় কৃষক পরিবারগুলোতে ব্যস্ততা বেড়েছে। কাকডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে কৃষকেরা জমিতে চারা পরিচর্যা, আগাছা পরিষ্কার ও পানি দেওয়াসহ নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। নিজেদের চাহিদাই নয়, বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এসব সবজি। ভালো দাম পেতে আগাম শাক—সবজির চাষে ঝুকছেন তারা।থানা এলাকার শিরোমনি, গিলাতলা, মশিয়ালীতে বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও কৃষি কাজে তৎপরতার সঙ্গে অংশগ্রহণ করছেন। খানজাহান আলী থানার শিরোমনি ও ফুলবাড়ীগেট এর হাটবাজারে এখনো পাওয়া যাচ্ছে শীতকালীন শাক—সবজির চারা। জাতভেদে সবজির চারার দামও ভিন্ন ভিন্ন। পেশাদার কৃষক ছাড়াও শৌখিন মানুষেরা শখের বশে ছাদ কৃষি ও আঙিনা কৃষিতে ঝুঁকছেন।আটরা গিলাতলা ইউনিয়ন এর মশিয়ালী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সবুজে সবুজে ভরে উঠছে মাঠ। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে সারি সারি শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, বেগুন, মুলা, করলা, পটল, পালং ও লাল শাকসহ রকমারি শীতকালীন সবজির চারা। মাঠে মাঠে এসব ফসল পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত তারা। কাকডাকা ভোরে কোদাল, নিড়ানি, বালতি, স্প্রে মেশিন ইত্যাদি নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন সবজি পরিচর্যায়। বিকেল পর্যন্ত পরিচর্যা করে বাড়ি ফিরছেন। এভাবে শীতকালীন সবজি নিয়ে চলছে কৃষকের কর্মযজ্ঞ। বেড়েই চলছে কাজের চাপ।ফুলতলা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, পুরুষের পাশাপাশি সবজি চাষে অবদান রেখেছে নারীরাও। সম্মিলিতভাবে নারী—পুরুষ চাষাবাদ করেন। পুরুষরা তাদের সহায়তা করেন এবং বাজারজাতের কাজ করেন। তবে টানা বর্ষনে এবার শুরুতেই কৃষকদের বেশ সমস্যা তৈরি হয়েছে। কৃষি বিভাগ সবজি চাষে উৎসাহ দেওয়ার জন্য কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে। গিলাতলা ইউনিয়নের পাড়িয়ারডাঙ্গা গ্রামের হাজেরা বেগম জানান, একসময় গ্রামগুলোয় নারীরা এত কাজ করতেন না। সে সময় প্রায় প্রতিটি ঘরেই অভাব ছিল। এখন পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও মাঠে কাজ করেন। এ কারণে ১২ মাস গ্রামগুলোয় সবজি চাষ হয়। অভাবও ঘুচে গেছে গ্রামের চাষিদের।একই এলাকার আজগার মিয়া বলেন কৃষাণ—কিষাণিরা সমানতালে কৃষি কাজ করছেন। নারীরা ক্ষেত সামলে সংসারের রান্নাসহ ছেলে—মেয়েদের দেখাশোনার দায়িত্বও পালন করেন। ফসল সংগ্রহ, বাজারজাতকরণ এবং কৃষাণিদের জন্য নতুন নতুন সবজি ক্ষেত তৈরিসহ অন্য কাজে ব্যস্ত থাকেন পুরুষরা। স্থানীয় কৃষকরা জানান, গ্রামগুলোর উৎপাদিত শাক—সবজি জেলার চাহিদা পূরণ করে খুলনা ও ঢাকাতেও চালান হচ্ছে। অনেক সময় পরিমাণে অল্প হলেও হাটে সবজি বিক্রি করতে নিয়ে যান নারীরাই।ফুলতলা উপজেলা উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শেখ মনজুর আলম বলেন, প্রান্তিক চাষিদের মাঝে শীতের শাক—সবজির মানসম্পন্ন বীজ এবং সার দেওয়া হয়েছে। কৃষকদের প্রণোদনা ও পরামর্শসহ নানাভাবে সহযোগিতা করছে কৃষি বিভাগ। কৃষি ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ গ্রামীণ অর্থনীতিকে আরও মজবুত করছে।’
0 মন্তব্যসমূহ