নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জুট মিলের শ্রমিকদের বকেয়া পাওনার কারনে ব্যাপক আকারে শ্রমিক অসন্তোষ এর আশঙ্কা রয়েছে , খুলনায় বন্ধ থাকা বেসরকারি জুট মিলগুলোতেও ইতিমধ্যে বাড়ছে শ্রমিক অসন্তোষ। শ্রমিক নেতাদের সাথে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে। বকেয়া বেতন—বোনাস পরিশোধ না হওয়ায় এ অসন্তোষ বিরাজ করছে।এদিকে, বেতন—বোনাসের দাবিতে বেসরকারি পাট, সুতা বস্ত্রকল শ্রমিক কর্মচারি ফেডারেশনের আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।সংশ্লিষ্ট জানা যায়, খুলনার আটরা ও মিরেরডাঙ্গা শিল্প এলাকায় দির্ঘদিন ধরে বকেয়া বেতন—বোনাসও চূড়ান্ত পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ সে তালিকায় রয়েছে মহসেন, সোনালী, জুট স্পিনার্স , এ্যাজাক্স, ট্রান্সওয়েশন ফাইবার্স। তবে শিরোমনি জুট স্পিনার্স মিলের শ্রমিককে নামমাত্র বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে।সূত্র জানায়, মিরেরডাঙ্গার এ্যাজাক্স জুট মিলটি ২০১৪ সালের ২২মে বন্ধ হয়ে যায়। মিল বন্ধ হলেও মিল মালিকের কাছে শ্রমিকদের প্রায় ১৬ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে শ্রমিকের বকেয়া বেতন দূরে থাক সেমাই চিনি কেনার মতো টাকাও দেয়নি মালিকপক্ষ। শিরোমনি শিল্পাঞ্চলের মহসেন জুট মিলটি ১৩ মাস লে—অফ থাকার পর ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই মিলটি বন্ধ করে ৬৬৭ জন শ্রমিক—কর্মচারী ছাঁটাই করে মিল কর্তৃপক্ষ। শ্রমিক কর্মচারীদের প্রায় ১০ কোটি টাকা বকেয়া পাওনা রয়েছে। নানা অজুহাতে মিলের মালিক—শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করছে না।২০১৮ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি আটরা শিল্প এলাকার আফিল মিলটি বন্ধ হয়। ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে কয়েকজন শ্রমিককে টাকা দিলেও ২০২৩ সালে অনেক শ্রমিমকে মিল মালিক টাকা পরিশোধ করেছে, যদিও মিলের শ্রমিক নেতা নিজামউদ্দীন শ্রম আইন অনুযায়ি শ্রমিকরা যাতে টাকা পায় সে দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন । শিরোমনি বিসিক শিল্প এলাকার জুট স্পিনার্স মিলটি ২০১৬ সালে বন্ধ হয়।মিলটিতে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ১ হাজার ২শ’ শ্রমিক কাজ করতো। শ্রমিক—কর্মচারীদের বকেয়া পাওনা রয়েছে কয়েক কোটি টাকা। বর্তমানে মিলটি আংশিক চালু রয়েছে। মিরেরডাঙ্গা শিল্প এলাকার সোনালী জুট মিলের শ্রমিক—কর্মচারীদের অভিযোগ মিলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মিম তালুকদার বর্তমানে মিলটি আংশিক চালুর নামে চরম লুটপাট শুরু করেছে , ইতিমধ্যে এ নিয়ে একাধিকবার পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন মিম তালুকাদার , সরকারী দলের অনেক গুরুত্বপুর্ন নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে মিম তালুকদার এ কাজ করছেন, তার বিরুদ্ধে, মিলের অনেক দামি ম্যাশিনারীজ ভাঙ্গারি দামে বিক্রয়, মিলের একটি নতুন ট্রাক বিক্রয়, মিলের দামি দামি গাছ, মিলের ভিতর থাকা একটি স, মিল বিক্রয় সহ নতুন করে আরো মালামাল বের করার প্রস্তুতি চলছে বলে শ্রমিকরা জানান। অতিদ্রত তদন্ত কমিটি গঠন করে তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান শ্রমিকরা সোনালী জুট মিলের একাধিক শ্রমিক বলেন শ্রমিক এর দেনা পাওনা পরিশোধ না করে মিল থেকে মালামাল বের না করার সিদ্ধান্ত হয় ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে । মহসেন জুট মিলের শ্রমিক নেতা কাজী আমির মুন্সি বলেন নিজের জীবন—যৌবন পার করলাম, মিলে কাজ করে শেষ বয়সে এসে কাজ করার ক্ষমতা নেই। মালিকের কাছে ৫ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে, টাকাটা দিলেও অন্য কিছু করে খেতে পারতাম। বেসরকারি পাট, সুতা, বস্ত্রকল শ্রমিক—কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল খান বলেন, শ্রমিক—কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধ না করে পাটকলগুলো বন্ধ রাখায় অনেকেই নিঃস্ব হয়ে গেছেন। বেকার হয়ে পড়া এসব মিলের শ্রমিক—কর্মচারী আর বসে থাকবেনা সামনে সংসদ নির্বাচন এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমরা আবারও রাজপথে আন্দোলন এর মাধ্যমে আমাদের নায্য পাওনা আদায় করবো, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ছাড়া আমাদের এ সমস্যার সমাধান হবে না বলেও উল্লেখ করেন এ শ্রমিক নেতা।
0 মন্তব্যসমূহ